দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট বার মসজিদের খতিব মুফতি আবু জাফর।
জানাজায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. রুহুল আমিন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হক, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, সিনিয়র আইনজীবীরাসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী অংশ নেন।
জানাজা শেষে বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের মরদেহে প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তার মরদেহ দাফনের উদ্দেশে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গতকাল (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে মারা যান সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
১৯৪০ সালের ১৩ জানুয়ারি কুমিল্লায় সৈয়দ আমিরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর ১৯৬৫ সালে ৯ সেপ্টেম্বর বার কাউন্সিল সনদ লাভের পর তিনি আইন পেশায় যুক্ত হন। একই বছর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭২ সালে সৈয়দ আমিরুল ইসলাম লন্ডনের ‘লিংকনস ইন’ থেকে বার এট ল ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৯৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর দুই বছর পর ১৯৯৬ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের পদ থেকে অবসরে যান।
বিচারপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর একই বছরের ৩১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে পুনরায় আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে উদ্ভূত মানবতাবিরোধী আপরাধ মামলাসমূহের আপিল শুনানির জন্য ২০১৩ সালের ১২ মার্চ সৈয়দ আমিরুল ইসলামকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
বাংলাদেশে আরবিট্রেশন আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ ও বিকাশে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছেন সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। মিষ্টভাষী, সদালাপী ও সজ্জন হিসেবে তিনি সকলের কাছে বিরল সম্মানের পাত্র ছিলেন।
তাঁর বাবা এবং স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া তাঁর একমাত্র সন্তান সৈয়দ অপূর্ব ইসলাম সুপ্রিম কোর্টের একজন নিয়মিত আইনজীবী।