মামলা ফাইলিংয়ের চেয়ে নিষ্পত্তির হার বেড়েছে : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী

দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের অবদান অবস্মরণীয় : প্রধান বিচারপতি

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে তিন টায় আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আপীল বিভাগের বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সবুর।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের স্মৃতি চারণে আলোচনা রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ মমতাজউদ্দিন ফকির, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট এ.এফ. হাসান আরিফ, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ.কে.আজাদ খান, আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা (অনারারী) ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ প্রমুখ।

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ব্যক্তি চরিত্র কখনো আদালতকে বিভ্রান্ত করেননি। আইন পেশার বাইরেও তিনি অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি নিজ কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়েও সমাজসেবায় অন্যান্য অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে তার অবদান অবস্মরণীয়। আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনসহ ২৫টিরও বেশি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি।’

সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তার কর্মদক্ষতা দিয়ে আইন জগতে ভাস্বর হয়ে থাকবেন। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার ছিলেন তিনি। তার সান্যিধ্যে এসে বহু আইনজীবী প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সর্বপেশার মানুষকে শ্রদ্ধা করতেন তিনি। সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন।’

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যু আগ পর্যন্ত তিনি আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। এর পর যুক্তরাজ্য থেকে ১৯৬২ সালে বার অ্যাট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন।

দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এ আইনজীবী। দলমত নির্বিশেষে রাজনীতিবিদরা সব বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা সবসময় তাঁকে পাশে পেয়েছেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তার জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়।