মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
ষাট হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের দায়ে ১১ জন আসামীকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে প্রত্যেক আসামীকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় ১১ জন আসামীর মধ্যে ৯ জন আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন-চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার মৃত আবদুল কাদেরের পুত্র মোঃ আবদুল আজিজ মাঝি (৪৫), মৃত আবদুল জলিলের পুত্র মোঃ হারুন (৪০), খলিলুর রহমানের পুত্র মোঃ শফি আলম (২৫), মৃত ছালেহ আহমদের পুত্র নুরুল আলম প্রকাশ মনু (২৭), মুছা মিয়ার পুত্র মোঃ আবদুল হামিদ প্রকাশ হামিদ (২৫), মুসার পুত্র আবদুর নুর প্রকাশ নুরু (২৫), আবদুস সোবহানের পুত্র মোঃ মনির (২৫), মোহাম্মদ ইসমাইলের পুত্র মোঃ বাবুল (২৫) এবং ছেরাগ আলী হাওলাদারের পুত্র মহি উদ্দিন (৩০)। এছাড়া দন্ডিতদের মধ্যে ২ জন আসামী পলাতক রয়েছে। তারা হচ্ছে-একই এলাকার আবদুল জলিলের পুত্র মোঃ ফরিদ (৪২) এবং মোঃ ইসমাইল।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন-কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ। আসামীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মঈনুল আমিন।
একই আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম আব্বাস উদ্দিন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম‘কে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০১৫ সালের ৬ আগস্ট বিকেল ৩ টার দিকে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৫ কি: মি: পশ্চিম দিকে বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ড স্টেশনের একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে ইঞ্জিন চালিত একটি ফিশিং বোট আটক করে। পরে ফিশিং বোটটি তল্লাশি করে ৬০ হাজার ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার এবং বোটে থাকা ৯ জন মাঝি মাল্লাকে আটক করে।
এ ঘটনায় সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ড স্টেশনের পেটি অফিসার এম. মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে ধৃত ৯ জনকে আসামী করে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৫ ধারা সহ, ১৯(১) ধারার টেবিলের ৯(খ)/৩৮ ধারায় টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ১০/২০১৫ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৫০৮/২০১৫ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৩০১/২০১৮ ইংরেজি।
বিচার ও রায় :
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে ধৃত ৯ জন আসামী এবং বোটের মালিক মোঃ ফরিদ ও মোঃ ইসমাইলকে অভিযুক্ত করে মোট ১১ জন আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ৯ জুলাই বিচারের জন্য মামলাটি বিচারের জন্য চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়।
মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন ও রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। মঙ্গলবার মামলাটির রায়ের দিনে বিজ্ঞ বিচারক, কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল উল্লেখিত ১১ জন আসামীকে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৫ ধারা সহ, ১৯(১) ধারার টেবিলের ৯(খ)/৩৮ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন। একইসাথে প্রত্যেক আসামীকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন।