রাজবাড়ীতে গণধর্ষণ মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

সিলেটে হত্যা মামলায় ১ আইনজীবীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

দীর্ঘ ১৯ বছর পর আলোচিত আব্দুল আলীম হত্যা মামলার রায়ে সহোদরসহ এক আইনজীবীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৯ নভেম্বর) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শায়লা শারমিন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য নুরুল ইসলাম ও তার ভাই সবজুল ইসলাম।

রায়ে তাদের মধ্যে সবজুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং নুরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এছাড়া মামলার আরেক আসামি মইনুল হককে ১০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার দায় থেকে ৩৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলা চলাকালিন ৫ আসামি মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছেন আদালত সূত্র।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে আইনজীবী নুরুল ইসলাম ও সবজুল ইসলাম, একই গ্রামের মৃত আব্দুল রহিমের ছেলে মইনুল হক। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সবজুল পলাতক রয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের হাজী জামিন খানের ছেলে আব্দুল আলীম। এ ঘটনায় নিহতের সহোদর আজমল খান বাদী হয়ে পরদিন দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ চন্দ্র সাহা ৪১ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষে অভিযোগ তুললে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

পরবর্তীতে সিআইডি তদন্ত শেষে ৪১ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সুনামগঞ্জ আদালত বার বার অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্য করলেও তা গঠন হয়নি। পরবর্তীতে ন্যায় বিচারের জন্য মামলাটি সিলেটে স্থানান্তর এবং অভিযোগ গঠনের জন্য বাদীপক্ষ ২০১২ সালে উচ্চ আদালতে রিট করেন।

পরবর্তিতে মামলাটি সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলী এবং অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৪ মে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদলতের বিচারক ৪১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার কার্য শুরু করেন।

মামলার দীর্ঘ শুনানি ও ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন ও আইনজীবী শহিদুজ্জামান বলেন, মামলার মূল অপরাধি নুরুল ইসলামের বন্দুকের গুলিতে আব্দুল আলীম নিহত হয়েছিলেন। আদালতে সেটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বাদী পক্ষও ন্যায় বিচার পেয়েছেন।