ঋণের বিপরীতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। তবে স্থগিত চেয়ে করা আবেদনটি শুনানির জন্য ১ ডিসেম্বর নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত।
এ মামলার শুনানি চেম্বার আদালত বলেন, ‘পঁচিশ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকের কোমরে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ যারা পঁচিশ লাখ-কোটি টাকা পাওনা তাদের কিছু হয় না। ’
ব্র্যাক ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলায় সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালতে শুনানি ছিল। এতে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লা আল বাকী।
শুনানির সময় আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়। হাইকোর্ট রায় দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না। নিম্ন আদালতে এ সংক্রান্ত বিচারাধীন সব মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলা যাবে না। ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে এ সময় আদালত ২৫ হাজার টাকার জন্য কোমরে দড়ি, ২৫ লাখ-কোটির সময় কিছু হয় না বলে মন্তব্য করেন। পরে আগামী আগামী ১ ডিসেম্বর মামলা শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মামলার রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে বলা হয়, ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা করা যাবে।
চেক ডিজঅনার মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বরাইল গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীসহ তিনজনের আপিল গ্রহণ করে এ রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। রায়ে আদালত বলেন, ব্যাংক ঋণের বিপরীতে যে ব্ল্যাঙ্ক চেক নিচ্ছে সেটা জামানত, বিনিময় যোগ্য দলিল নয়। জামানত হিসেবে নেওয়া সেই চেক দিয়ে ‘চেক ডিজঅনার’ মামলা করা যাবে না।