আজ ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিগনিটি, ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস ফর অল’ (‘মানব-মর্যাদা, স্বাধীনতা আর ন্যায়পরায়ণতা, দাঁড়াব সকলেই অধিকারের সুরক্ষায়’)।
১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয় মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান।
প্রতিটি মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে। ঘোষণাপত্রের ৩০টি অনুচ্ছেদে প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার ও রাষ্ট্রের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘোষণাপত্র গ্রহণের দিনটি প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এ বছর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ‘৭৫ বছর পূর্তি’ পালিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এই দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন, আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির বাণী
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, আমি আশা করি মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সকল মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয় বলেও বাণীতে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত মানুষের সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। জাতিসংঘ মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ বছর মানবাধিকার দিবস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।
আমাদের সরকারের আমলেই জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশ চার বার সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের এই ফল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং প্রচারে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং অঙ্গীকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতির সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।
তাছাড়াও এটি দেশে এবং বিদেশে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কতিপয় ব্যক্তিবর্গের দেওয়া মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন উদ্দেশ্যকেও মিথ্যা প্রমাণ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃস্বার্থ সংগ্রাম ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতা লাভের মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই তিনি দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার দলিল হিসেবে সংবিধান প্রণয়ন করেন।