মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন এর ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে দায়েরকৃত ফৌজদারী দরখাস্তটি শুনানী শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম সেটি এজাহার হিসাবে গণ্য করে জেনারেল রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করার জন্য কক্সবাজারের ঈদগাঁহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কক্সবাজারের ঈদগাঁহ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের উত্তর নাপিতখালী গ্রামের মৃত ইসলাম আহমদ ও হাফেজা ইসলাম এর পুত্র অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন জিআর : ১২৪/২০১৮ (কক্সবাজার সদর) নম্বর মামলাটি বাদী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী হিসাবে আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন।
এতে উক্ত মামলার আসামী একই এলাকার মোহাম্মদ মনজুরুল হাসান তাহসিন (২৪) ও তার পিতা মনজুর আলম (৫২) ক্ষিপ্ত হয়ে মামলাটি বাদীর হয়ে পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিনকে চাপ দিতে থাকে। তারা বিভিন্ন সময়ে অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলো।
এরই ধারাবাহিকতাতায় গত ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটের দিকে ঈদগাঁহ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নুতন অফিস বাজারে আমিন মেম্বারের মার্কেটের সামনে আসামী মোহাম্মদ মনজুরুল হাসান তাহসিন, মনজুর আলম সহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন সন্ত্রাসী দলবদ্ধ হয়ে অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি, হাতুড়ি, লাটি দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরতর আহত হন।
এসময় অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিনের শোর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঘটনাস্থল থেকে আহত অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়।
পরে আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন সহ তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন চিংড়ি ঘের কেটে দিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে বলে ফৌজদারী দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
এঘটনায় অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম এর আদালতে মোহাম্মদ মনজুরুল হাসান তাহসিন, মনজুর আলম সহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে মঙ্গলবার এ ফৌজদারী দরখাস্তটি দায়ের করেন।
বিচারক মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম দরখাস্তটি শুনানী শেষে সেটি এফআইআর হিসাবে গণ্য করে জিআর মামলা হিসাবে এন্ট্রি করার জন্য ঈদগাঁহ থানার ওসি-কে নির্দেশে দেন।
ফৌজদারী দন্ড বিধির ৪২৭/৩৪২/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় দায়েরকৃত এ মামলায় ৪ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। ফৌজদারী দরখাস্তটির গ্রহনযোগ্যতা শুনানীকালে আদালতে অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন এর পক্ষে ১৫/১৬ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট এস.এম জসিম উদ্দিন তাঁর ফৌজদারী দরখাস্তে আরো বলেন, আসামীদ্বয়ের হুমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তিনি থানায় জিডি করেছেন, প্রতিকার চেয়ে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতিতে আবেদনও করেছিলেন।
আসামীরা সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির লোকজন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের বিভিন্ন আদলতে আরো ৫ টি মামলা রয়েছে। মামলা গুলো হচ্ছে-জিআর : ১২৪/২০১৮ (কক্সবাজার সদর), জিআর : ২৯১/২০১৪ (কক্সবাজার সদর), সিআর ১২১৭/২০১৩ (কক্সবাজার সদর), মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে জিআর : ৬০/২০১৫ (উখিয়া), মানিস্যুট মামলা ০৪/২০২২ (কক্সবাজার সদর)।