শুধুমাত্র বন্ধ্যাত্বের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করা যাবে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার উচ্চ আদালত। এই প্রবণতাকে মানসিক নির্যাতন বলেও মন্তব্য করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বের কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, হাইকোর্ট ওই ব্যক্তির অভিযোগ বাতিল করেছে। খবর হিন্দুস্থান টাইমসের
প্রতিবেদনের খবর অনুযায়ী, ওই দম্পতি বেলেঘাটার বাসিন্দা। তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্ক ৯ বছরের। ওই মহিলা পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক। তবে সন্তান না হওয়ায় তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এরজন্য বেঙ্গালুরুর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাও চলেছিল তাঁর।
তবে ২০১৭ সালের জুন মাসে স্বামী বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এর ঠিক এক মাস পরে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনায় বেলেঘাটা থানার পুলিশ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট দাখিল করে। তাতে বিশ্বাসভঙ্গ, মানসিক নির্যাতন সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়।
এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। সেই মামলায় বিচারপতি শম্পা দত্ত বলেন, ‘শুধুমাত্র বন্ধ্যাত্বের জন্য বিবাহবিচ্ছেদ করা যায় না। বাবা-মা হওয়ার জন্য অনেকগুলি বিকল্প রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একজন স্বামীকে তাঁর স্ত্রীর পাশে থাকা উচিত। তাঁকে বুঝতে হবে। তবেই মহিলা মানসিকভাবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেন।’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘একজন মহিলার মা হওয়ার স্বপ্ন থাকে। কিন্তু সন্তান না হলে তিনি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান। তাই এই অবস্থায় স্বামীর কর্তব্য হল স্ত্রীর পাশে দাঁড়ানো।’
বিচারপতি মনে করেন, এখন ওই মহিলা অনেক মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে বিবাহবিচ্ছেদ করা সঠিক নয়। এটি মহিলার ওপর মানসিক নির্যাতনের সমতুল্য।
এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় পুলিশকে মামলা রুজু করতে বলেছে।