চট্টগ্রাম বারে অনেক প্রথিতযশা আইনজীবী আছেন, তাঁদেরকে অনুসরণ করলে বিচার অঙ্গনে সততা ও নৈতিকতা বজায় রেখে নিজেকে ভালো আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক ভোজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম নগরীস্থ জি.ই.সি কনভেনশনে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, ১৮৯৩ সালের ২৩শে মার্চ মাত্র ১৭ জন বিজ্ঞ আইনজীবীর সমন্বয়ে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনী সহায়তা প্রদানের মহান ব্রত নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি জন্ম নিয়েছিল। কালের পরিক্রমায় তা আজ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আইনজীবী সমিতি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পবিত্রতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির গৌরবময় ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। তাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সে সব বিজ্ঞ আইনজীবীদের যাঁদের অবদানে সমিতি আজ গৌরবান্বিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত।
সর্বোচ্চ আদালতের এই বিচারক বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এবং বঞ্চিত জনগনের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বারের আইনজীবীদের সংগ্রাম ও অগ্রণী ভূমিকা সর্বজনবিদিত। বার ও বেঞ্চের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষায় তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, এই সমিতিতে অনেক প্রথিতযশা আইনজীবী আছেন, তাঁদেরকে অনুসরণ করলে বিচার অঙ্গনে সততা ও নৈতিকতা বজায় রেখে নিজেকে ভালো আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
এ সমিতির অনেক বিজ্ঞ সদস্য বিচার অঙ্গনে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি সমিতির সকল বিজ্ঞ সদস্যদের সার্বিক সাফল্য এবং সমিতির অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করেন।
বার্ষিক প্রীতিভোজ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ হাশেম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম. জিয়াউদ্দিন, সঞ্চালনায় ছিলেন সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদুর রহমান রিটু।
ভোজ অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে চট্টগ্রামের পাঁচ বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি যথাক্রমে মো. হাবিবুল গণি, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি মাহমুদুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ এম আমিন উদ্দিন, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভূঞা, মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সদস্য এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন নাহার রুমী, চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুন নুর দুলাল প্রমুখ।
উক্ত অনুষ্ঠানে জজশীপে কর্মরত ২জন বিচারক প্রধান বিচারপতি পদক প্রাপ্ত হওয়ায় মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা ও সিনিয়র সহকারী জজ মোছাঃ রেশমা খাতুনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ শফিক উল্লাহ্, সহসভাপতি মোহাম্মদ আজিজ উদ্দীন (হায়দার), অর্থ সম্পাদক এম. সালাহ্উদ্দিন মনসুর চৌধুরী (রিমু), পাঠাগার সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন (দোয়েল), নির্বাহী সদস্য যথাক্রমে মো. তৌহিদুল বারী চৌধুরী, এ.এন.এম. রোকনুজ্জামান (মুন্না), মো. খোরশেদ আলম, মো. মোস্তফা করিম, তৌহিদুল ইসলাম, মো. আবদুল্লাহ-আল-মামুন, বিলকিস আরা (মিতু), আইনুল কামাল, শ্যামল চৌধুরী, সেলিনা আক্তারসহ সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণসম্পাদকবৃন্দ সহ বিপুল সংখ্যক বিজ্ঞ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে আগত অতিথিদের নৈশ ভোজে আপ্যায়িত করা হয় এবং ২য় পর্বে সংগীত শিল্পী দীপ্র এবং দুর্জয়ের পরিবেশনায় এবং সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক লায়লা নুরের পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে র্যাফল ড্র সম্পন্ন হয়।