কুমার দেবুল দে : সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জারি করা একটা নোটিশ দেখলাম, ফেইসবুকে অনেককেই দেখলাম বুঝে না বুঝে এইটা শেয়ার করতে। তবে বুঝুন, আর নাই বুঝুন এই নোটিশের ফলাফল খুবই ভয়াবহ।
নোটিশে বলা হয়েছে অধস্তন আদালতের কর্মচারীরা যেন কোন মামলার কাগজের ফটোকপি সরবরাহ না করেন। কারও দরকার হলে সার্টিফায়েড কপি (জাবেদা নকল) সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মামলার কাগজের ফটোকপি সরবরাহকে একটি বেআইনি কাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
এর ফলাফল যা দাঁড়ায়, কোন তদন্তাধীন বিষয়ে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়া হলে অনেক কাগজই এখন উচ্চ আদালতের গোচরে আনা যাবেনা। পাশাপাশি এইটাও দেখতে হবে যে, উচ্চ আদালত সেইসব গুরুত্বপূর্ণ কাগজ না দেখে উক্ত মামলায় কোন আদেশও দিবেন না, উক্ত কাগজ সমূহের সার্টিফায়েড কপিও সংগ্রহ করা সম্ভব হবেনা বিষয়টি তদন্তাধীন বলে।
আরও পড়ুন : অধস্তন আদালত থেকে মামলার নথিপত্রের ফটোকপি সরবরাহ না করার নির্দেশ
কোন চেক বা চিত্র বা ছবি জাতীয় কোন ডক্যুমেন্টস (নথি) আদালতে দাখিল করা হলে তার কোন সার্টিফায়েড কপি পাওয়া যাবেনা উচ্চ আদালতে দাখিল করার প্রয়োজন হলে। যেই ডক্যুমেন্টস এর সার্টিফায়েড কপি পাওয়া সম্ভব বা সেইটি আপনার কোন কাজে বা অন্য মামলায় প্রাসঙ্গিক হলে শুধুমাত্র উক্ত মামলার কোন পক্ষভুক্ত না হওয়ায় আপনি উক্ত কাগজটির সার্টিফায়েড কপি তুলতে পারবেন না।
সর্বোপরি এখন থেকে সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিন বা এন্টিসিপেটরি বেইলের দরখাস্ত দাখিলের সুযোগ হারাবে লিটিগ্যান্টরা (বিচারপার্থীরা)। ফলাফল আগাম জামিন বন্ধ হয়ে যাবে, কারণ আগাম জামিনের দরখাস্ত করতে হলে মামলার মূল কাগজগুলোর ফটোকপি লাগে, ফটোকপি সরবরাহকে যেহেতু বেআইনি কাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে তাই এই আইনগত প্রতিকারটা অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে।
জানিনা এ কেমন সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের! অচিরেই সাধারণ লিটিগ্যান্টদের কথা ভেবে ন্যায় বিচারের পরিপন্থী এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।
লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট।