লক্ষ্মীপুর সদরে পালিয়ে দেবরকে বিয়ে করে সংসার করায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। দণ্ডিত আসামির নাম মো. খোকন শেখ (৪৯)। তিনি বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের মানিক দাইড় গ্রামের বাসিন্দা।
আসামির উপস্থিতিতে সোমবার (১৫ মে) লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে পিপি জসিম উদ্দিন বলেন, খোকন তার স্ত্রী শহর বানু এবং তিন ছেলেকে নিয়ে গাজীপুরের তুরাগের ভাবনার টেকে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে খোকন ব্যবসা করতেন। তার চাচাতো ভাই ফরিদ ওই বাসায় আসা-যাওয়া করতেন।
একপর্যায়ে শহর বানুর সঙ্গে ফরিদের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের জেরে শহর বানু এবং ফরিদ পালিয়ে লক্ষ্মীপুরে চলে আসেন। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেডিয়ামের পাশের ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করেন তারা।
আইনজীবী বলেন, এরপর খোকন তাদেরকে খুঁজতে লক্ষ্মীপুরের ওই বাসায় আসেন। স্ত্রীকে তার সঙ্গে চলে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শহর বানু খোকনকে জানিয়ে দেন, তাকে তালাক দিয়ে ফরিদ শেখকে বিয়ে করেছেন। তারপর ফিরে যান খোকন।
২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল সকালে আবারও স্ত্রীকে নিয়ে যেতে আসেন খোকন। তখন ওই ঘরে একাই ছিলেন শহর বানু। স্ত্রী যেতে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে খোকন ক্ষিপ্ত হয়ে শহর বানুকে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
সরকারি এই আইনজীবী আরও বলেন, স্থানীয় লোকজন খোকনকে রক্তমাখা কাপড়ে ওই বাসা থেকে বের হয়ে যেতে দেখেন। পরে দক্ষিণ মজুপুর গ্রাম থেকে তাকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেন। এ ঘটনার পরদিন তাদের বড় ছেলে সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে বাবাকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম আদালতে খোকনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালত সোমবার এ রায় দেয়।
আদালত রায়ে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।