দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৮ বছর পূর্তি আজ। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। এ হামলায় দু’জন নিহত ও অন্তত ১০৪ জন আহত হন। মুন্সিগঞ্জ ছাড়া সব জেলায় প্রায় ৫০০ পয়েন্টে বোমা হামলা চালানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর ও র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সারাদেশে ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে ৮টি, আরএমপিতে ৪টি, কেএমপিতে ৩টি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৭টি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭টি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৬টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে ৩টি মামলা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে ১৪২টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বাকি ১৭টি মামলায় ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামি শনাক্ত করতে না পারায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয় ৯৬১ জনকে। এক হাজার ৭২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
সারাদেশে দায়ের করা ১৫৯টি মামলার মধ্যে এখনও চলমান ৪১টি। বাকী ১০২টি মামলায় ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছে ১৫ জনকে, যার মধ্যে ছয়জনের অন্য মামলায় ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। তারা সবাই জেএমবি সদস্য। এছাড়া আরও অন্তত সাড়ে তিনশ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, সাক্ষীর অভাবে ঝুলে আছে বিচার। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষীদের পাওয়া যায়নি; অপেক্ষা করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশও চেষ্টা করছে সাক্ষীদের খুঁজে বের করতে। তারপরও সাক্ষ্য যা হয়েছে বা আরও কয়েকটা সাক্ষ্য নেয়া শেষ করে এ বছরের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। চাঞ্চল্যকর এসব মামলা চাইলেই তো শেষ করে দেয়া যায় না। একটা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হয়।
এ ঘটনার পর থেকে দিনটিকে সিরিজ বোমা হামলা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। দলটি এদিন সারাদেশে প্রতিবাদ সভা করে। এবারও সেই কর্মসূচি পালন করবে।
কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।