নিখোঁজ ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণার প্রক্রিয়া
অ্যাডভোকেট মোঃ করমুল্লাহ্

দেওয়ানী মোকদ্দমায় ইস্যু গঠনের সময়সীমা ও ফার্স্ট হেয়ারিং প্রসঙ্গ

মোঃ করমুল্লাহ্: দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮ এর আদেশ ১৪, বিধি ১(৫) বলা হয়েছে য, মোকদ্দমার প্রথম শুনানির তারিখ বা লিখিত জবাব দানের তারিখ হতে ১৫ দিনের মধ্যে যেটা পরে ঘটে। ইস্যু গঠন করতে হবে।

আদেশ ৮, বিধি ১ বলা আছে- সমন জারির তারিখ হতে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করতে হবে। কিন্তু বিবাদি যদি ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করতে ব্যর্থ হয় তখন আদালত আরো সময় বৃদ্ধি করতে পারবেন কিন্তু তা কোনভাবেই ৬০ কার্য দিবসের বেশি হবেনা।

আদেশ ৯, বিধি ১ বলা হয়েছে সমনে নির্ধারিত তারিখে পক্ষগণ আদালত হাজির হবেন এবং বিবাদী লিখিত জবাব দিবেন। অতঃপর আদালত কর্তৃক ভবিষ্যতের কোনো দিন পর্যন্ত মোকদ্দমার শুনানি মুলতবি না করলে সে দিনেই মোকদ্দমার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আবার দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮ এর ৮৯এ ধারার ১ উপ ধারায় বলা হয়েছে যে, লিখিত জবাব দাখিল এর পরে এডিআর এর ব্যবস্থা রাখতে হবে, এটা ২০০৬ সংশোধনীর মাধ্যমে করা হয়েছিল কিন্তু তখন এটি বাধ্যতামূলক ছিল না। পরে ২০১২ সালে এডিআর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

প্রথম শুনানি (ফার্স্ট হেয়ারিং)

আদেশ ৮, বিধি ১ এবং আদেশ ৯, বিধি ১ একসাথে বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় মোকদ্দমার প্রথম শুনানি বলতে বুঝানো হয়েছে সমনে উল্লেখিত বিবাদী কর্তৃক আদালতে হাজির হওয়ার তারিখ।

কিন্তু ২০০৬ সালে দেওয়ানি কার্যবিধির ৮৯এ ধারা মোতাবেক এডিআর সংযুক্ত করে অতঃপর ২০১২ সালে বাধ্যতামূলক করার কারণে সমনে উল্লেখিত দিনে প্রথম শুনানি করার কোন সুযোগ নাই।

এডিআর ব্যর্থ হলে মোকদ্দমার ইস্যু গঠনের জন্য একটি তারিখ নির্দিষ্ট করে রাখতে হয় ওই তারিখে ইস্যু গঠনের উদ্দেশ্যে উভয়পক্ষের বক্তব্য আদালত শুনবেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনাকে ফার্স্ট হিয়ারিং বলা হয়।

একই দিনে আদালত বিশেষ কারণে মুলতবি ঘোষণা না করলে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনার পর ইস্যু গঠন করবেন। ফার্স্ট হেয়ারিং কে বিচার পূর্ব শুনানি বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে ফার্স্ট ইয়ারিং হয় কিনা আমার জানা নাই, উভয়পক্ষ হাজিরা দিয়ে যার যার মত চলে যায়।

যেহেতু লিখিত জবাব দাখিল করার পর এডিআর করা বাধ্যতামূলক সেহেতু মোকদ্দমা প্রথম শুনানি অথবা লিখিত জবাব দাখিল করার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ইসু গঠন করা সম্ভব নয়।

আইন অনুযায়ী ইস্যু গঠন করতে হবে এডিআর সফল অথবা ব্যর্থ হওয়ার পরবর্তী সময়ে। সময়টা কতদিন সে বিষয়ে আইনে সুনির্দিষ্ট কোন ব্যাখ্যা নাই। তাই আদালতের ইচ্ছামত ইস্যু গঠন করা হয়ে থাকে।

লেখক: আইনজীবী, চট্টগ্রাম জজ আদালত।