দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ফৌজদারি মিস শাখার মামলা সংক্রান্ত ৯ বস্তা কাগজ অন্যায় ও অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে একাধিক কর্মচারীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একইসঙ্গে বিধি অনুযায়ী এমন কর্মকান্ড অসদাচরণের সামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিধায় অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের চাবি রাখার স্থান থেকে চাবি নিয়ে ন্যায় স্মরনি গেট খুলে দুটি ভ্যানগাড়িতে করে ৯ বস্তায় মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজ বোঝাই করে নিয়ে যান।
উচ্চ আদালতের কোর্ট কিপিং শাখার এমএলএসএস এনামুল হক শিকদার দারোয়ান এনামুল শিকদারকে ফোন করে বস্তা বোঝাই কাগজ বিক্রয়ের উদ্দেশে ভ্যান গাড়িতে করে করে দোকানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ন্যায় স্মরনি গেট খুলে দিতে বলেন। দারোয়ান এনামুল মূল ভবনের চাবি রাখার স্থানে ডিউটিরত দারোয়ান মো. সোহরাব হোসেনের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেটের তালা খুলে দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে এমএলএসএস এনামুল হক শিকদার জানান, ফৌজদারি মিস শাখার সুপারিনটেনদেন্ড মো. তাবিবুর রহাওমানের অনুমতিক্রমে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত নথির কাগজপত্র ৯টি বস্তায় বোঝাই করে দোকানে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
বস্তাগুলো নামানোর কাজে এমএলএসএস এনামুল হক শিকদারকে দারোয়ান ওয়াহিদুজ্জামান সহায়তা করেন। ১৯ আগস্ট দিনের বেলায় বস্তাগুলো ফৌজদারি মিস শাখা থেকে নামিয়ে বিজয়-৭১ ভবনের নীচে রাখা হয়েছিল, পরে রাতের বেলায় দারোয়ান এনামুল সিকদারের সহায়তায় ভ্যানগাড়িতে করে বস্তাগুলো সরিয়ে নিয়ে বিক্রয় করা হয়।
এমএলএসএস এনামুল হক শিকদার কাগজগুলো বস্তা ভর্তি করে ক্রেতা ঠিক করে দাম সাব্যস্ত করে বিক্রয়ের মূল কাজ করেছেন। দারোয়ান ওয়াহিদুজ্জামান বস্তাগুলো ফৌজদারি মিস শাখা থেকে নীচে নামানোর কাজে এবং ভ্যানগাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেন। দারোয়ান এনামুল শিকদার মূল ভবনে চাবির দায়িত্বে থাকা দারোয়ান মো. সোহরাব হোসেনের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ন্যায় স্মরনির গেট খুলে দিয়ে ভ্যানগাড়িগুলোকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন।
পরস্পর যোগসাজশীভাবে তাঁদের এমন কর্মকান্ড সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ, হাইকোর্ট ডিভিশন, এমপ্লয়ি (ডিসিপ্রলিন অ্যান্ড আপিল) রুলস, ১৯৮৩ এর বিধি ২(৪) মোতাবেক অসদাচরণের শামিল এবং বিধিমালার ৩(বি) মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিধায় অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় বিভাগীয় মামলা রুজু করে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
দারোয়ান এনামুলের দেওয়া তথ্য অনুসারে ঘটনার পরপরই ঢাকার নিমতলীর ৩৬ নং নবাব কাটরাস্থ মেসার্স ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ থেকে মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজ ভর্তি ৯টি বস্তা উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে আসা হয়।