বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণে নাকি ‘গলদ’ রয়ে গেছে। সেই ভুলকে চ্যালেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন এক ব্যক্তি। এরপরেই ওই ব্যক্তির এহেন আচরণকে পুরোটাই সস্তায় নাম কেনার প্রচেষ্টা বলে দাবি করে পাল্টা তাঁকেই ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করল দেশটির শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি জেবি পাদ্রিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
জানা গেছে, অশোক পাণ্ডে নামে ওই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণ ত্রুটিপূর্ণ। তাঁর অভিযোগ, সংবিধানের তৃতীয় তফসিল লঙ্ঘন করে শপথ গ্রহণের সময় বিচারপতি নিজের নামের আগে ‘আমি’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।
এছাড়া শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলির সরকারের প্রতিনিধি এবং প্রশাসকদের। এরপরেই বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন তিনি।
তার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের একটি বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, বিচারপতিদের এই শপথ গ্রহণ প্রক্রিয়া চলে সরকারের তত্ত্বাবধানে। একবার তা হয়ে যাওয়ার পর তা নিয়ে আপত্তি তোলা যায় না।
শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, আবেদনকারী এভাবে পিআইএল দাখিল করে নিজের দিকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। রাজ্যপাল নিজে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন। সেই প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার পর তা নিয়ে আপত্তি করার এখতিয়ার নেই কারও, জানিয়েছে আদালত।
ওই বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি জেবি পাদ্রিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্র তাঁদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, এরকম অতি সামান্য বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা আসলে আদালতের সময় নষ্ট করা এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর সামিল। শুধু তাই নয়, তা বিচারবিভাগের পরিকাঠামো এবং লোকবল নষ্ট করে।
এরপরেই তাঁরা জানান, এই ধরনের তুচ্ছ বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে এবার দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা আরোপ করার সময় এসে গেছে। এরপরেই মামলা খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ওই বেঞ্চ জানায়, আবেদনকারীকে এই মামলা দায়ের করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে যা তাঁকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে।
আদালত আরও জানিয়েছে, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে জরিমানার টাকা জমা না দেওয়া হলে লখনউতে জেলাশাসক এবং সংগ্রাহকের মাধ্যমে ভূমি রাজস্ব হিসেবে তা আদায় করা হবে ওই ব্যক্তির থেকে।