আপিল বিভাগের এক বিচারপতি সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করে আদালত অবমাননার দায়ে দণ্ডিত দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে হাজির হলে বিচারক জুলফিকার উল্ল্যাহ তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে পৌনে ১টার দিকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে তাকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়।
এদিকে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের আত্মসমর্পণকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কায় জেলা আদালত চত্বরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় আদালত চত্বর এলাকায় বিএনপির নেতা কর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার মামলায় গত ২ অগাস্ট বিএনপি চেয়ার পারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।
ওই রায়ের পর দিনাজপুর বিএনপি কার্যালয়ে দলের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ সভা করেন। ওই সমাবেশে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতিকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের দেওয়া ওই বক্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী।
সেই আবেদনে গত ১৭ আগস্ট আপিল বিভাগ মেয়রের প্রতি আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করেন। পাশাপাশি ২৪ আগস্ট তাঁকে আদালতে হাজির থাকার আদেশ দেন।
নির্ধারিত দিনে মেয়র আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করলে আপিল বিভাগ ১২ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করেন।
পরে আদালত মেয়র জাহাঙ্গীরকে এক মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও সাত দিনের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে আদালত পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে জেলা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
গতকাল মঙ্গলবার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জরিমানার নগদ এক লাখ টাকা দিনাজপুর গাউসুল আজম বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে জমা দেন। আজ (বুধবার) শহরের জেল মোড় এলাকায় দলীয় কার্যালয় থেকে নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজির হন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।