ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জাইকার Road Traffic Safety Project এর আওতায় ভারতের হায়দ্রাবাদ হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
“Traffic System and Solution in Hyderabad, India” শীর্ষক প্রশিক্ষণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মোট ৫ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ট্রাফিক বিভাগের দলটির নেতৃত্ব দেন ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।
বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষ, চৌকস ও মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হোসেন আলীর সন্তান। তিনি ১৯৮৪ সালে কুড়িগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে এসএসসি এবং ২০০১ সালে এইচএসসি পাশ করেন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে মেরিন সায়েন্স বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে পুলিশ সায়েন্স-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে জার্মান ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স ও ডিপ্লোমা কোর্স ডিগ্রী অর্জন করেন।
৩০তম বিসিএস এর মাধ্যমে তিনি ২০১২ সালের ৩ জুন সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীতে সফলতার সহিত মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে প্রথমে দিনাজপুর জেলায় শিক্ষানবীশ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষানবীশকাল শেষে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ৪ এপিবিএন বগুড়ায় যোগদান করেন। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত আছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। মো: জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা’র রামপুরা ট্রাফিক জোনের প্রথম সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করে ডিএমপি’র মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় একটানা ১২ বার শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করেন এবং ট্রাফিক পূর্ব বিভাগে একটানা ১৬ বার শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে পুরষ্কার গ্রহণ করেন।
এছাড়াও তাঁর পরিকল্পনা ও সৃষ্টিশীল চিন্তায় বাংলাদেশে প্রথম দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সহকারী পুলিশ কমিশনার, রামপুরা ট্রাফিক জোন এর কার্যালয় নির্মিত হয়। তাঁর সার্বিক সমন্বয়ে নির্মিত নবসৃষ্ট রামপুরা ট্রাফিক জোনের কার্যালয়টি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের জন্য তথা ঢাকা মহানগরীর জন্য একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হয় সবসময়।
এছাড়া তিনি মিরপুর ও দারুসসালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবেও সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনায় তাঁর তত্ত্বাবধানে মিরপুর, কাফরুল, দারুসসালাম ও শাহআলী থানায় সেবার মান উন্নয়ন বহুগুনে বৃদ্ধি পায়।
তিনি প্রথম অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (কোয়ার্টার মাস্টার -পিওএম) হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। পিওএম এ থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফোর্স ম্যানেজমেন্টের সাথে যুক্ত থেকে দায়িত্ব পালন করে “আইজিপি ব্যাচ -২০২০” পুরস্কার গ্রহণ করেন।
মো: জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে ডিএমপি’র ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টিশীল ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখে মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
তিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগরীসহ আশপাশের জেলার যানযট নিরসনে বাস্তবিক ও তাত্ত্বিক বিশ্লেষণধর্মী বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ট্রাফিক ইন্টারসেকশন ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক মার্জিং, আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল, নিরাপদ পথচারী চলাচল, ই-চালান, রিয়েল টাইম ট্রাফিক ভলিউম ক্যাপচার, কেন্দ্রীয় ট্রাফিক সার্ভার এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার, মহানগরীর ট্রাফিক সার্কুলেশন পরিকল্পনা, যানবাহন শ্রেণীবিন্যাস ও অধিকতর নিরাপদ ব্যবহার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সময়োপযোগী প্রযুক্তির ব্যবহার, “ট্রাফিক সেফটি অ্যান্ড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইউজিং আইটিএস সেন্সিং টেকনোলজি” এবং “কালেকশন অ্যান্ড এনালাইসিস অব ট্রাফিক এক্সিডেন্ট ডাটা অ্যান্ড ইউজ অব এনালাইসিস রেজাল্টস” ইত্যাদি নানা বিষয়ে নিবিড়ভাবে জ্ঞান চর্চা করছেন।
এডিসি জাহাঙ্গীর আলম ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ট্রাফিক পার্ক, ট্রাফিক সচেতনতা বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম, ড্রাইভার আচরণ, প্রকৌশলগত উত্তম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক আইন ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা ও বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে ট্রাফিক আইন প্রয়োগে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যসহ অংশীজনদের ভূমিকা নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত গঠনমূলক আলোচনা ও উপস্থাপন করেন।
তিনি ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রতিটি ইন্টারসেকশনের সুবিধাজনক স্থানে আধুনিক সকল সুবিধাসম্পন্ন ট্রাফিক বক্স স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করছেন সবসময়।
এছাড়াও সকল সহকারী পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক জোন গুলোর জন্য আধুনিক অফিস ও জোনভিত্তিক CCTV কন্ট্রোল রুম স্থাপনের বিষয়েও গঠনমূলক গুরুত্ব তুলে ধরেন বিভিন্ন অংশীজন সমন্বয় সভায়। আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও জাতীয় অর্থনীতিতে এর ভূমিকা নিয়ে নিয়মিত তিনি বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গুরুত্ব তুলে ধরেন।