সুপ্রিম কোর্টে নিয়োজিত রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ বায়োপিক দেখেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টে নিয়োজিত রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটি দেখা শেষে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিকসহ ২৬২ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিনেমাটি দেখে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মুজিব একটি চেতনার নাম। এই সিনেমার মাধ্যমে বাঙালি জাতির ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। বাঙালির জন্য, দেশের জন্য তিনি কীভাবে সংগ্রাম করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সেটি তুলে তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়ে আমার মনে হয়েছে, আমার অফিসের সব কর্মকর্তাদের নিয়ে যদি মুভিটি দেখতে পারি, তাহলে সবার জন্যই ভালো হবে, সেই কারণে এসে দেখলাম। নতুন প্রজন্মের সবাইকে এই মুভি দেখার আহ্বান জানান তিনি।
জিয়াউর রহমানকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে মর্মে সিনেমাটির প্রদর্শন বন্ধ চেয়ে বিএনপির আইনজীবীদের আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সঠিক ইতিহাস সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিন্দুমাত্র বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। আমি তাদের বলবো তারা যেন এসে সিনেমাটি দেখেন।
আরও পড়ুন: ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর যে আত্মত্যাগ, বলিষ্ঠ ভূমিকা, সিনেমায় সেটি তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম সত্যিকারভাবে ইতিহাস অনুধাবন করতে পারবে। এই সিনেমার মাধ্যমে আমরাও অনেক বিষয় জেনেছি। ছোট অনেক বিষয় ফুটে উঠেছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, আমরা ২৬২ জন রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা সিনেমাটি দেখেছি একসঙ্গে। সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, কীভাবে বিপথগামী সেনা কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
সিনেমার শেষের দিকে যে নির্মম হত্যার ঘটনাটি দেখানো হয়েছে, তাতে আমরা সবাই বাকরুদ্ধ। এটি দেশের সব মানুষের দেখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
সিনেমাটি দেখার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি জেসমিন সুলতানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একটি পরিবারের সবাইকে নৃশংসভাবে যে হত্যার দৃশ্য সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রী সহ্য করেছেন কীভাবে, সেটাই ভাবতে পারছি না। আল্লাহ তাকে অনেক সহ্যক্ষমতা দিয়েছেন। নির্মম এই দৃশ্য দেখার পর বলার মতো কিছু থাকে না।
প্রসঙ্গত, মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি নির্মণা করা হয়। ২ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের এ সিনেমাটি বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় করা হয়েছে।
সিনেমাটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে আরিফিন শুভ, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনা চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, আবদুল হামিদ খান ভাসানী চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ, তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ অভিনয় করেছেন।
গত ১৩ অক্টোবর ঢাকাসহ সারা দেশের সিনেমা হলে ছবিটি প্রদর্শন শুরু হয়।