ঢাকার সাভার উপজেলার চান্দুলিয়া, কন্ডা ও কান্দি বলিয়ারপুর মৌজার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বামনী খালের জায়গায় অননুমোদিত তিনটি আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাটসহ সব কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (১৪ জানুয়ারি) রুলসহ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং ও সুগন্ধা হাউজিং—এই তিন আবাসন কোম্পনি ইতিমধ্যে কী পরিমাণ খালের জমি ভরাট করেছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ও ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), ব্লাস্ট ও নগর–পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান আবেদনকারী হয়ে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী শামিমা নাসরিন ও এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
রিট আবেদনকারীপক্ষ জানায়, ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার চান্দুলিয়া মৌজার আরএস দাগ নম্বর ১, ৭০; কন্ডা মৌজার আরএস দাগ নম্বর ৩৬৫, ৩৯০ এবং কান্দি বলিয়ারপুর মৌজার আরএস দাগ নম্বর ৫ খাল হিসেবে চিহ্নিত। ওই দাগে অবস্থিত খালটি স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে ‘বামনী খাল’ হিসেবে পরিচিত।
আবাসন প্রকল্পগুলো বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) চিহ্নিত জলাশয় ভরাট করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদন ও ছাড়পত্র গ্রহণ ছাড়াই পরিচালিত হয়ে আসছিল।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয় থেকে জম জম নূর সিটিকে ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর ২৩ লাখ টাকা এবং রাজউক থেকে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ৫ লাখ টাকা জরিমানা করার পরও কোম্পানিটি আবাসন প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ ও পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অনুমোদন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ছাড়াই খাল ও পার্শ্ববর্তী কৃষিজমি ভরাট করে জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং এবং সুগন্ধা হাউজিং নামের আবাসন প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধে ও বামনী খাল যথাযথ সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।