ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজাধসে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলার বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মামলায় ভবনমালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার (১৫ জানুয়ারি) এই আদেশ দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
আদেশের পর সোহেল রানার আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, মামলাটির বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচার শেষ না করতে পারলে জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
মামলায় সোহেল রানার জামিন মঞ্জুর করে (রুল অ্যাবসলিউট) গত বছরের ৬ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। যা গত ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এরপর গত ৮ মে আপিল বিভাগ সোহেল রানার জামিন স্থগিত রেখে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল ১০ জুলাই শুনানির জন্য দিন রাখেন। সেদিন আপিল বিভাগ শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। এই সময় পর্যন্ত সোহেল রানার জামিন স্থগিত থাকে। আগের ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মুনমুন নাহার।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজাধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় একই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে ভবনমালিক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর থেকে তিনি কারাগারে।
এ ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলা করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।
আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে ২০২২ সালে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন সোহেল রানা। আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ৬ এপ্রিল রুল অ্যাবসলিউট (জামিন মঞ্জুর) করে রায় দেন হাইকোর্ট।