ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট শুরুর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীর মাঠে এক পাশে ৫০ জনের মতো সাদা শার্ট পরা ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা কেউ আইনজীবী নন। সবাই বহিরাগত। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সাদা শার্ট পরা সবাইকে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে দেন আইনজীবীরা।
এদিকে, বুধবার (৬ মার্চ) নির্বাচনে ভোটারদেরকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে বহিরাগতদের সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বরাবর এ আবেদন করেছেন তিনি।
আবেদনে তিনি লিখেছেন, একজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর পক্ষে বেশ কিছু লোক যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য কিংবা ভোটার নন, তারা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিশেষ অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে মহড়া দিচ্ছেন এবং ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করছেন, যা সুষ্ঠু নির্বাচনে অন্তরায়।
অতএব, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অত্র সমিতির সদস্য কিংবা ভোটার ব্যতীত অবাঞ্ছিত/বহিরাগত ব্যক্তিদের দ্রুত অপসারণ করে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছি।
অন্যদিকে, আজ বুধবার নির্বাচন উপলক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সকাল ১০টা ২০ মিনিট থেকে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের মিলনায়তনে স্থাপিত ৫০টি বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। একইভাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবারও ভোটগ্রহণ চলবে। এবারের নির্বাচনে সাত হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনায় উপ-কমিটিকে সহযোগিতা করছেন ১৫০ জন আইনজীবী।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল করিম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সব প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ও বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও কয়েকজন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
সাদা প্যানেল
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন, সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, দুই সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মোহাম্মদ আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, দুই সহ-সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির পল্লব। সাতটি সদস্য পদে সৌমিত্র সরদার রনী, মো. খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, রাশেদুল হক খোকন, মাহমুদা আফরোজ, বেলাল হোসেন শাহীন, খালেদ মোশাররফ রিপন ও রায়হান রনী।
নীল প্যানেল
বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন, সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), দুই সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, দুই সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান মিলন ও মো. আব্দুল করিম। সাতটি সদস্য পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল।
স্বতন্ত্র
এই দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে ইউনুছ আলী আকন্দ ও সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান নির্বাচন করছেন।
এছাড়া, সম্পাদক পদে সাদা ও নীল প্যানেলের বাইরে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন।