সহজ সরল ভাষায় ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ বাগধারাটির অর্থ যে ব্যক্তি দোষ করে তার দায়ভার চাপানো হয় অন্য ব্যক্তির উপরে। এবার অভিযোগ উঠেছে নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে আসল আসামি ফাঁসিয়েছেন নিরীহ এক ব্যক্তিকে।
সাত বছর আগের ঘটনা। ঢাকায় মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়ে এক যুবক পুলিশের কাছে নিজের নাম বলেছিলেন ফরহাদ (২৭)। বাবার নাম জয়নাল হক। বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার প্রধানপাড়া গ্রাম।
ফরহাদ নাম দাবি করা এই ব্যক্তিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। এক মাসের কম সময় কারাগারে থাকার পর জামিনে ছাড়া পেয়ে তিনি লাপাত্তা হন।
মামলায় দুই বছর পর রায় হয়। রায়ে আসামিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আসামি পলাতক থাকায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরোয়ানা পেয়ে পঞ্চগড় থেকে ফরহাদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বোদা থানার পুলিশ। ১৪ দিন জেল খেটে জামিনে ছাড়া পেয়ে এই ফরহাদ তাঁর নামে হওয়া সাজার রায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন।
আদালতকে তিনি বলেন, গাঁজাসহ গ্রেপ্তার হওয়া ফরহাদ তিনি নন। তাঁর নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে তাঁকে আসল আসামি ফাঁসিয়েছেন।
আপিলকারী ফরহাদের দাবির সত্যতা যাচাইয়ে আদালত প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির ছবি ও স্বাক্ষরসংবলিত নিবন্ধন খাতা হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে কারা কর্তৃপক্ষ প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির ছবি ও স্বাক্ষরসংবলিত নিবন্ধন খাতা আদালতে জমা দিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
আপিলকারী আদালতে পৃথক একটি আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির স্বাক্ষর ও আপিলকারীর স্বাক্ষর এক কি না, তা যাচাইয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন আদালত।
সিআইডির যাচাইয়ে মাদকসহ গ্রেপ্তার ব্যক্তির স্বাক্ষরের সঙ্গে আপিলকারীর স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়নি।
আপিলকারী ফরহাদের আপিল আবেদনের ওপর রায়ের জন্য ১৪ মার্চ তারিখ ধার্য রয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ আপিল আবেদনটির ওপর রায় দেবেন।