বিয়ের সময় স্ত্রীর পাওয়া গয়না বা অন্য মূল্যবান সম্পত্তি তথা স্ত্রীধনে কেবলমাত্র স্ত্রীর অধিকার। সেখানে স্বামীর কোনও অধিকার নেই। এক মামলায় এমনটাই জানালেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ওই মামলায় পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে স্ত্রী ধন কোনও যৌথ সম্পত্তি নয়। অর্থাৎ স্ত্রীর উপহার পাওয়া সম্পত্তিতে স্বামীর কোনও অধিকার নেই। তবে সংকটের সময় তিনি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সেটা সঠিক সময় ফেরতও দিয়ে দিতে হবে।
স্ত্রীধন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে একটা দাম্পত্য কলহ হয়ে গিয়েছিল। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তদের এজলাসে এই মামলা উঠেছিল।
যে সমস্ত উপহার বিয়ের সময়, বিয়ের আগে, পরে তার বাবা মা, শ্বশুর শাশুড়ি, আত্মীয় বন্ধুরা দেন, তা টাকাপয়সা, গয়নাগাটি, জমি হতে পারে তার অধিকার একমাত্র ওই স্ত্রীর হাতেই থাকে।
এনিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ওই সম্পত্তিতে কেবলমাত্র স্ত্রীরই অধিকার রয়েছে। ওই সম্পত্তিতে কোনওভাবেই স্বামীর কোনও অধিকার নেই।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সংকটের সময় স্বামী এগুলি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এগুলি রক্ষা করা তাঁর কর্তব্য। তবে স্বামী কখনওই এর অধিকার পেতে পারে না।
সেই সঙ্গেই আদালত জানিয়েছে, আইপিসির ৪০৬ ধারায় কোনও স্বামী বা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে যদি স্ত্রীধনের অপব্যবহার করা হয় অসততার সঙ্গে।
এই মামলায় স্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিয়ের পরই তার গয়না আটকে রেখেছেন তার স্বামী। সম্পর্ক বিষিয়ে যাওয়ার পরেই তিনি পারিবারিক আদালতে গিয়ে জানান যে তার গয়না তাকে ফেরত দিতে হবে।
এদিকে পারিবারিক আদালত জানিয়েছিল স্বামীকে ৮.৯ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। তবে কেরল হাই কোর্ট এই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। সেই সময় হাইকোর্ট জানিয়েছিল, স্বামী যে স্ত্রীধন আটকে রেখেছেন তার কোনও প্রমাণ তিনি হাজির করতে পারেননি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট সব বিষয়টি বিচার বিবেচনা করে জানিয়েছে যে স্বামীকে ২৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। কারণ ১৫টা বছর পেরিয়ে গিয়েছে পারিবারিক আদালতের রায় ঘোষণা করার পরে। এক্ষেত্রে কার্যত স্ত্রীকে এই টাকা দেওয়ার ব্যাপারে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
মামলায় স্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিয়ের পরই তার গয়না নিয়ে নিয়েছেন তার স্বামী। সম্পর্ক বিষিয়ে যাওয়ার পরেই তিনি পারিবারিক আদালতে গিয়ে জানান যে তার গয়না তাকে ফেরত দিতে হবে। পারিবারিক আদালত স্ত্রীর কথাকেই মান্যতা দিয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই পারিবারিক আদালতের রায়কেই মান্যতা দিল।