পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ
আইনি নোটিশ

ঢাকা জজ কোর্টের সকল আদালতে এসি স্থাপনে আইনি নোটিশ

বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের সকল আদালতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপনের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে উক্ত আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন ঢাকা জজকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।

নোটিশে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঢাকার জেলা প্রশাসক কে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান জানান, বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবীবৃন্দ ও বিচারকগণের জীবনের সুরক্ষায় এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরের তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াস অতিক্রম করছে। তাপপ্রবাহ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের শরীরও গরম হয়ে যায়।

এর ফলে রক্তনালীগুলো খুলে যায়। এর জের ধরে রক্ত চাপ কমে যায় যে কারণে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করা হৃদপিণ্ডের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কারণে মৃদু কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে যার মধ্যে রয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া, চুলকানি এবং পা ফুলে যাওয়া যা রক্তনালী উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনসব আদালতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস বাস্তবায়ন করা হবে : প্রধান বিচারপতি

এছাড়াও প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীরে তরল পদার্থ ও লবণের পরিমাণ কমে যায়, গুরুতর ক্ষেত্রে দেহে এ-দুটো জিনিসের মধ্যে যে ভারসাম্য আছে তাতেও পরিবর্তন ঘটে। এসব কিছু একসাথে মিলিয়ে গরমে শরীর পরিশ্রান্ত হয়ে যেতে পারে এবং তার লক্ষণগুলো হচ্ছে: মাথা চক্কর দেওয়া, বমি বমি ভাব, নিস্তেজ হয়ে পড়া, মূর্ছা যাওয়া, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়া, পেশি সংকুচিত হওয়া, মাথা ব্যথা, প্রচণ্ড ঘাম হওয়া, ক্লান্তি,আর রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

এসব কারণে “সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন” (সিডিসি) মানুষকে বিভিন্ন গাইডলাইন দেওয়ার পাশাপাশি যথাসম্ভব শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকার পরামর্শ দিয়েছে ।

নোটিশ বলা হয়েছে, বর্তমানে এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ ও বিজ্ঞ বিচারকগণ চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঢাকা জজকোর্টের কোর্টগুলোর আয়তন খুবই ছোট এবং বিপুল সংখ্যক বিচার প্রার্থীদের ভিড়ে অধিকাংশ কোর্টের এজলাস গিজগিজ করে।

আরও পড়ুনব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরের অভিযান : ছুটির দিনে বসল হাইকোর্ট

একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ, অপরদিকে ছোট আয়তনের কোর্টের এজলাসে বিপুল সংখ্যক বিচার প্রার্থীদের ভিড়, সবমিলিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ ও বিজ্ঞ বিচারকগণরা অত্যন্ত কষ্টে তাদের আইনি দায়িত্ব পালন করেন।

এমতাবস্থায় এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ ও বিজ্ঞ বিচারকগণের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য ঢাকা জজকোর্টের সকল আদালতে অবিলম্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপন করা অত্যাবশ্যক।

যদিও ঢাকা জজকোর্টের মাত্র কয়েকটি কোর্টে যেমন বিজ্ঞ সিএম‌এম, জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও মহানগর দায়রা আদালত কোর্টে এসি আছে তথাপি এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজ কোর্টের সকল আদালতে অবিলম্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপন করা আবশ্যক।

আইনি নোটিশ পাওয়ার ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা জজকোর্টের সকল আদালতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) লাগানোর ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজলাস কক্ষে এসি স্থাপন সময়ের দাবী

এদিকে এই প্রচণ্ড তাপদাহে নিন্ম আদালতের এজলাস কক্ষে পর্যায়ক্রমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) স্থাপন সময়ের দাবী বলে জানিয়েছেন ঢাকার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন।
ঢাকার জেলা জজ আদালতের কনফারেন্স রুমে গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সদস্যদের সাথে মত বিনিময় সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
এদিন জেলা জজ মো. হেলাল উদ্দিন ঢাকার জেলা জজ হিসেবে যোগদান করায় কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে তাকে ক্রেষ্ট ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।
প্রধান বিচারপতি পুরস্কার প্রাপ্ত জেলা জজ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিলাসিতা নয় কোর্ট এজলাসে এসির ব্যবস্থা হলে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীরা অনেক উপকৃত হবে।
তাছাড়া তিনি আরও বলেন, কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর সদস্যদের বস্তু নিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের জন্য আহবান জানান। এছাড়া বর্তমানে আদালত প্রাঙ্গনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার যে কার্যক্রম চলমান আছে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। আদালতের রাস্তা ঘাট কার্পেটিং করে আরো সুন্দর কিভাবে করা যায় তা নিয়ে গণপূর্তের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।
সর্বপরি আদালত প্রাঙ্গনে আইনশৃংখলা এবং নিরাপত্তা যেন বজায় থাকে তার জন্য সাংবাদিকদের সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানান।
কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি মো. রুবেল হালদারের সভপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. গাফফার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম জেলা জজ মো. আলমগীর হোসাইন, মিটফুল ইসলাম, কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর কার্যকরী কমিটি সদস্যসহ উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যরা।