বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্নার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ জানুয়ারি তাদেরকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফ এ আদেশ দেন।
এদিন শুনানির সময় সুপ্রিম বার এসোসিয়েশনের ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না নিষিদ্ধের বিষয়টি জানতে পেরে বিচারপতিগণ আশ্চর্য বোধ করেন। একইসঙ্গে গরুর মাংসের মত একটি বৈধ খাবার সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ক্যান্টিনগুলো কেন রান্না করতে দেওয়া হবে না এ ব্যাপারে আদালত সরকার পক্ষের আইনজীবীদের কাছে জানতে চান।
এসময় কোর্টে উপস্থিত প্রায় সকল আইনজীবীগণ উক্ত মামলার সমর্থনে একাত্মতা পোষণ করেন এবং আদালতে মামলার সমর্থনে দাবী জানান।
আদালত সামগ্রিক বক্তব্য শ্রবণ করে আগামী সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ২ ঘটিকায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও সম্পাদককে আদালতে উপস্থিত হতে বলেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান হাইকোর্টের এ রিট আবেদন করেন। তিনি বলেন, এর আগে সুপ্রিম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন করা হয়েছিল। তিনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন হাই কোর্টে রিট আবেদন করা করেছি।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে শুরু হচ্ছে তদন্ত
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদককে বিবাদী করা হয়েছে ওই রিট আবেদনে।
সেখানে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা তাদের পেশাগত কাজে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোর্টে অবস্থান করেন। বেশিরভাগ আইনজীবীকে তাদের সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং বিকালের নাস্তা সারতে হয় সুপ্রিম কোর্টের ক্যান্টিনগুলোতে।
“কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না ও বিক্রি করা হয় না। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অবৈধ ও অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্যান্টিনগুলো গরুর মাংস রান্না ও বিক্রি করতে পারে না।”
রিট আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের ‘বেশিরভাগ আইনজীবী’ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আবার ইসলাম ধর্মাবলম্বী আইনজীবীদের মধ্যে বেশিরভাগ আইনজীবীই তরুণ।
“অপরদিকে গরুর মাংস ইসলাম ধর্মাবলম্বী মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অবৈধ ও অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞার কারণে মুসলিম ধর্মাবলম্বী আইনজীবীরা বারের ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস খেতে পারছেন না।”
রিটকারী আইনজীবীর যুক্তি, “এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের অধীন ‘জীবনের অধিকার’ এ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে; তাই এখানে গরুর মাংস রান্না ও বিক্রি করতে নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ বৈআইনি ও অসাংবিধানিক।”
আবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্যগত কারণে বা ধর্মীয় বিশ্বাসগত কারণে যারা গরুর মাংস খেতে চান না, তাদের জন্য ক্যান্টিনগুলোতে কিছু ‘আলাদা’ চেয়ার ও টেবিল রাখা যেতে পারে।