নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতারকৃত ১১ জন আসামিকে আইনী বাধ্যবাধকতা থাকা স্বত্ত্বেও নিয়মিত আদালতে উপস্থাপন না করায় সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত।
নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলাম শুক্রবার (২ মে) এ আদেশ দেন।
মাদকাসক্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেফতারপূর্বক তাদেরকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে মর্মে গত ২৪ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখে দৈনিক করতোয়া, যায় যায় দিন, বাংলাদেশ টুডে, সোনার দেশসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
কিন্তু গ্রেফতারকৃত ১১ জন আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৬১ ধারা মোতাবেক নিয়মিত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি। বিষয়টি বিচারকের নজরে আসলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ১২ মে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন আদালত।
নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালত এর বেঞ্চ সহকারী মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, “আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের ১১ জন মাদকসেবীকে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তা আমলি আদালতের নজরে আসে। প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে আমলি ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এটা স্পষ্ট যে, আটককৃত আসামিদেরকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে তাদেরকে সাজা প্রদান করা হয়েছে যা সুস্পষ্টভাবে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এবং মোবাইর কোর্ট আইন, ২০০৯ এর লঙ্ঘন।
ম্যাজিস্ট্রেট আদেশে উল্লেখ করেন, বলবৎ আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ঘটনাস্থল থেকে আটককৃত আসামিদের থানায় নিয়ে আসার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে বা নির্দেশনায় তাদেরকে পুনরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে ঘটনা সংঘটিত না হওয়া স্বত্ত্বেও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে অথচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আইনী বাধ্যবাধকতা ছিল আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে নিয়মিত মামলা দায়েরপূর্বক আত্রাই আমলি আদালতে উপস্থাপন করার। উপর্যক্ত আইন বহির্ভূত কার্যের মাধ্যমে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ আইন, ১৮৬১ এর ২৯ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন।