জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৪১ সালে। তখন থেকেই তাদের দলীয় প্রতীক হচ্ছে দাঁড়িপাল্লা। আর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৭২ সালে। কাজেই সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠারও আগে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে রাজনীতি করছে জামায়াতে ইসলামী।
আজ বুধবার (১৪ মে) দুপুরে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
শিশির মনির বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের অন্যতম বড় একটি দল। সব গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এবং সংসদীয় রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত যে কয়টি সংসদ বসেছে সঠিকভাবে যে কয়টা নির্বাচন হয়েছে। সব নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এমপি-মন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন কমিশন একটা নিবন্ধন ইস্যু করেন। কিন্তু বাংলাদেশের হাইকোর্ট মেজরিটি জাজমেন্টের ভিত্তিতে নিবন্ধনটি বাতিল করে। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছিলাম। আপিল মামলা আজকে শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানিতে আগামী ১ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, আজকে আমরা আদালতকে বলেছি জামায়াতের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার মাধ্যমে এবং কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করার মাধ্যমে বিচার বিভাগ রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। যারা এই মামলার শুনানি শেষে নিবন্ধন বাতিল করেছেন, তারা মূলত বাংলাদেশের উচ্চ আদালতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন। এ কারণে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। আমাদের এই আরগুমেন্ট আদালত অত্যন্ত মনোযোগসহকারে শুনেছেন, প্রত্যাশা করবো এই আরগুমেন্টের ভিত্তিতে আগামী ১ জুন জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন ফিরে পাবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী নতুন উদ্দ্যমে নতুনভাবে বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে মেজরিটির ভিত্তিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি রেজ্যুলেশন গ্রহণ করে। এই রেজ্যুলেশনের কারণে নির্বাচন কমিশন জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজকে আমরা আদালতের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বলেছি রাজনৈতিক দলের প্রতীক সুপ্রিম কোর্ট বরাদ্দ করতে পারেন না। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের। আদালত যেন এ বিষয়ে একটি অবজারবেশন দেন। নির্বাচন কমিশন যেন এ বিষয়ে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেন। আমরা আশা করি পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ মর্মে নির্দেশনা দেবেন।
এসময় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসেন, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।