কক্সবাজারে ৩ কোটি টাকার ইয়াবা পাচারের মামলায় ৭ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

কক্সবাজারে ৫ কোটি টাকার ক্রিষ্টাল মেথ পাচারের মামলায় একজনের যাবজ্জীবন 

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ৫ কোটি ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের এক কেজি ৩৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচারের মামলায় এক আসামীকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ বুধবার (২৮ মে) এ রায় ঘোষণা করেন। একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামী হলো : কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার মৃত আবদুস সালামের পুত্র হাবিবুল্লাহ (৩৭)। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এবং আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০২২ সালের ২৩ জুন রাত ১ টা ২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদীর জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করে সাঁতরিয়ে টেকনাফ খারাংখালী তীরে উঠার সময় টেকনাফস্থ ২ বিজিবি’র একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে মোঃ হাবিবুল্লাহকে আটক করে। পরে দেহ তল্লাশি করে এক কেজি ৩৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) উদ্ধার করা হয়। যার মূল্য ৫ কোটি ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় ২ বিজিবি’র নায়েব সুবেদার মোঃ আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে মোঃ হাবিবুল্লাহ সহ ২ জনকে আসামী করে টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৮৭, তারিখ : ২৩/০৬/২০২২ ইংরেজি, যার জিআর মামলা নম্বর : ৬০১/২০২২ ইংরেজি (রামু) এবং এসটি মামলা নম্বর : ২৬৬৮/২০২৩ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহার ভুক্ত ২ জন আসামী সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জসীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। মামলাটি বিচারের জন্য ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় মামলার আসামী মোঃ হাবিবুল্লাহকে দোষী সাব্যস্থ করে তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রায়ে মামলার চার্জসীটের অপর ৬ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।