আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া আক্রমণাত্মক, অসত্য ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে চীফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, আপিল বিভাগে এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলার শুনানি উপলক্ষে কিছু বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
এসব বক্তব্য বাস্তবতা বিবর্জিত ও আইনের অপব্যাখ্যার শামিল বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আপিল বিভাগে মামলার শুরুতেই চীফ প্রসিকিউটর অতীতে ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে স্বেচ্ছায় শুনানি থেকে বিরত থাকেন। এ কারণে মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম, ব্যারিস্টার শাইখ মাহদী ও মো. মামুনুর রশীদ। এদের কেউই পূর্বে অভিযুক্তের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেননি।
প্রসিকিউশন কার্যালয় আরও জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাঠামো, কার্যপ্রণালী ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং প্রসিকিউশন তাদের যুক্তি আদালতে উপস্থাপন করেছেন। এ ক্ষেত্রে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “একজন আইনজীবী একই ব্যক্তির পক্ষে ও বিপক্ষে একাধিক মামলায় কাজ করতে পারেন না—এটা সর্বজনস্বীকৃত। তবে একই দলের বা গোষ্ঠীর অন্য কারো পক্ষে পূর্বে কাজ করেছেন বলে কোনো ভিন্ন ব্যক্তির প্রসিকিউশন করতে পারবেন না, এমন কোনো বাধা আন্তর্জাতিক বা জাতীয় আইনে নেই।”
এই প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর বর্তমান প্রসিকিউটর করিম খান অতীতে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত চার্লস টেইলর, উইলিয়াম রুটো এবং সাইফ গাদ্দাফির পক্ষে আইসিসিতেই ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। তেমনি বাংলাদেশের খ্যাতনামা আইনজীবী মরহুম খন্দকার মাহবুব হোসেন ১৯৭৩ সালে দালাল আইনের অধীনে প্রধান কৌসুলি ছিলেন, পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ডিফেন্সের প্রধান আইনজীবী হিসেবেও কাজ করেছেন।
বিবৃতির শেষ অংশে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে চীফ প্রসিকিউটরের অফিস ও তদন্ত সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই অবস্থায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানানো হয়।