চট্টগ্রামের ডিসি অফিসের একজন গাড়িচালকের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা কুকুরকে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা ফৌজদারি অভিযোগ আদালত গ্রহণ করেছে। ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ডিসি হিলের মেইন গেট এলাকায়। অভিযোগ অনুযায়ী, একটি সাদা পিকআপ ভ্যান গেইট দিয়ে বের হতে গিয়ে বসে থাকা অন্তঃসত্ত্বা কুকুরটিকে চাপা দেয় এবং চালক ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। সেসময় গেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি গার্ড ঘটনাটি দেখেও কুকুরটিকে সরানো বা বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করেননি।
আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-০৪–এ তোফাইল আহম্মদ নামে একজন অভিযোগকারী পেনাল কোড ১৮৬০-এর ৪২৮ ধারাসহ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ধারায় সি.আর. মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাকে এটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, গেট খোলার পর সিকিউরিটি গার্ড অন্তঃসত্ত্বা কুকুরটিকে কাছে বসে থাকতে দেখেও সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেননি। এরপর পিকআপ ভ্যানচালক কুকুরটিকে স্পষ্ট দেখা সত্ত্বেও গাড়ি চালিয়ে সরাসরি চাপা দেন এবং পিষ্ট হয়ে মারা যাওয়া নিশ্চিত জেনেও দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হলে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রাণীপ্রেমীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন : মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশা গ্রেপ্তার
অভিযোগকারীর দাবি, ঘটনাটির ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য মামলাটি প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা জানা না থাকায় মামলায় তাদের অজ্ঞাতনামা চালক ও অজ্ঞাত সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে তদন্তে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আদালতকে জানান।
মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফয়সাল হামিদ, অ্যাডভোকেট স্বরূপ কান্তি নাথ, অ্যাডভোকেট ফজলুল সাব্বির অভি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রিদুয়ান, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন রাসেল, অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম রিপনসহ আরও অনেকে।
অভিযোগকারী তোফাইল আহম্মদ জানান, থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিলম্ব হলেও ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
ঘটনার প্রমাণ হিসেবে আদালতে সংযুক্ত করা হয়েছে— অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ভিকটিম কুকুরের আঘাতপ্রাপ্ত ছবিসহ ঘটনাস্থলের স্থিরচিত্র এবং সাদা পিকআপ ভ্যানের ছবি। এছাড়া প্রথম আলোর প্রকাশিত অনলাইন প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করা হয়েছে।

