এনসিপি থেকে মনোনয়ন পেলেন ১১ আইনজীবী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা—আইনজীবী প্রার্থী ১১ জন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২৫ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তরুণদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকা প্রকাশ করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে মোট ১১ জন আইনজীবী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজন নারী আইনজীবীও রয়েছেন।

এনসিপি মনোনীত আইনজীবী প্রার্থীরা হলেন- মেহেরপুর-২ আসনে অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, ঝিনাইদহ-১ আসনে অ্যাডভোকেট লাবাবুল বাসার (দয়াল বাসার), পটুয়াখালী-১ আসনে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা ও পটুয়াখালী-২ আসনে মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন। ভোলা-১ আসনে অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান, ময়মনসিংহ-৭ আসনে অ্যাডভোকেট এ. টি. এম. মাহবুব-উল আলম, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, সিলেট-৩ আসনে ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মো. ওমর ফারুক, নোয়াখালী-৫ আসনে অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর এবং খাগড়াছড়িতে অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা।

মেহেরপুর-২ আসনে অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ

অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ বর্তমানে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক, মেহেরপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী এবং এনসিপি সমর্থিত আইনজীবী সংগঠন ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্স–এর মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদার স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং গাংনী উপজেলা থেকে এই পদে দায়িত্ব পাওয়া প্রথম ব্যক্তি। দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবা, শিক্ষা উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত অ্যাডভোকেট সাকিল স্থানীয় তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশ ও নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করে আসছেন।

ঝিনাইদহ-১ আসনে অ্যাডভোকেট লাবাবুল বাসার (দয়াল বাসার)

তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে শৈলকুপা শাখার প্রধান সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করছেন। গত চার বছর ধরে কৃষকদের নিয়ে কাজ করছেন—দয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাঠে কৃষক ছাউনি, পাঠাগার, লাঠিখেলা ও ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া পুনরুজ্জীবন করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট লাবাবুল বাসার বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে তিনি শৈলকুপায় কৃষকদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। নিজের প্রতিষ্ঠিত দয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাঠে কৃষক ছাউনি স্থাপন, পাঠাগার স্থাপনসহ বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি লাঠিখেলা, গাদন খেলা, ফুটবল খেলার আয়োজন করে কৃষক তরুণদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। দীর্ঘ দিন ধরে মাটির সাথে সম্পর্কই শাপলা কলিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই শৈলকুপাতে দীর্ঘদিন ধরে যে রাজনীতি চলেছে, সেই রাজনীতি এখন আর চলেনা এখন অচল। নতুন বাংলাদেশে একটা বিদ্বেষহীন সমাজ ও নিরাপদ রাজনীতিক সমাজ গঠন করতে যে রাজনীতি প্রয়োজন সেটা করতে চাই আমি। শৈলকুপার সাধারণ মানুষ শাপলা কলি প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।’

পটুয়াখালী-১ আসনে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা

দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও আইন সম্পাদক। দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। শিক্ষাবিদ পরিবারের সন্তান। পটুয়াখালীতে একটি ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে এগোচ্ছেন তিনি। তরুণদের জন্য শিক্ষা–উন্নয়ন পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। এনসিপির নিবন্ধন এবং ‘শাপলা কলি’ প্রতীক পাওয়ায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, আমি পটুয়াখালী-১ আসনের তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চাই। এই জেলায় একটি ক্যাডেট কলেজ করতে চাই। যেখানে দক্ষিণ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবে। আশা করি এই এলাকার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে সংসদে এই এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।

পটুয়াখালী-২ আসনে অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন

এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে এলএলবি ও এলএলএম সম্পন্ন করে ১০ বছরের বেশি সময় সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। ছাত্রজীবনে বাউফল ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি বলেন—স্বাস্থ্যসেবা আধুনিকীকরণ, কারিগরি শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং কৃষক–মৎস্যজীবীদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া—এই তিন খাত তাঁর অগ্রাধিকার।

মনোনয়ন পাওয়ার পর মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, বাউফলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করাই আমার প্রধান অঙ্গীকার। স্বাস্থ্যসেবায় আধুনিক সরঞ্জাম ও পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স নিশ্চিত করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষা বিস্তার এবং কৃষক-মৎস্যজীবীদের ন্যায্যমূল্য ও বিশেষ সুবিধা প্রদান এই তিন খাতেই বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চাই। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি উন্নত ও বাসযোগ্য বাউফল গড়ে তুলবো।

ভোলা-১ আসনে অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান

ভোলা সদর উকিলপাড়ার বাসিন্দা।মনটর ডেম কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাংলাদেশ ল কলেজ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সফল শিক্ষাজীবন শেষে নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিশু–বিষয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত আইনজীবী হলেও ভোলার দরিদ্র মানুষের আইনি সহায়তার জন্য নিজ জেলা আদালতেও প্র্যাকটিস করেন। দীর্ঘদিনের মানবাধিকার কর্মী হিসেবে স্থানীয়ভাবে তাঁর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। ভোলার মানুষ শাপলা কলি নিয়ে তাঁকে জয়ের পথে দেখতে চায়—এমন গণসমর্থন ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান।

ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে অ্যাডভোকেট এ. টি. এম. মাহবুব-উল আলম

তিনি তরুণ প্রজন্মের সাহসী কণ্ঠ—ছাত্র আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং জুলাই ২৪ গণঅভ্যুত্থানে ময়মনসিংহ জেলার সর্বোচ্চ নেতৃত্ব দিয়েছেন। এনসিপির ময়মনসিংহ জেলা শাখার অন্যতম সমন্বয়কারী। মানবাধিকার–মাধ্যম এবং সুপ্রিম কোর্টের প্র্যাকটিসের পাশাপাশি ত্রিশালের উন্নয়নে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। তাঁর অঙ্গীকার—বৈষম্যহীন সমাজ, স্বচ্ছ প্রশাসন, মাদকমুক্ত যুবসমাজ, কর্মসংস্থান, আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং স্থানীয় ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন। তিনি বলেন—“এমপি হওয়ার জন্য নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচনে লড়তে চাই।”

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন। তিনি পেশায় আইনজীবী এবং দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয়। দলের ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে দুর্বল ও বঞ্চিত মানুষের আইনগত সহায়তায় নিবেদিত ছিলেন তিনি।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্ত থেকে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষা, শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের আইনি পরামর্শ প্রদান এবং বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ পরিচালনা করে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। এলাকায় তাঁর পরিচিতি একজন শান্ত, সমঝোতাপূর্ণ কিন্তু দৃঢ় নেতৃত্বের অধিকারী যুব আইনজীবী হিসেবে।

মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি বলেন,

নারায়ণগঞ্জের মানুষের উন্নয়নই আমার রাজনীতির মূল প্রতিশ্রুতি। শিল্পশহর নারায়ণগঞ্জকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে হলে আইন-শৃঙ্খলা, শ্রমিক নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং যুবদের দক্ষতা উন্নয়ন—এই চারটি জায়গায় বড় পরিবর্তন আনতে হবে। এনসিপির শাপলা কলি প্রতীক নিয়ে আমি সেই পরিবর্তনের জন্যই মাঠে নেমেছি।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় শিল্পাঞ্চলের সড়ক সংকট সমাধান, শ্রমিক ন্যায়বিচার ট্রাইব্যুনালের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, নারী ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র স্থাপন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সেফটি-স্ট্যান্ডার্ড জোরদার করা—এগুলো হবে তাঁর অগ্রাধিকার।

এলাকার তরুণ ভোটাররা বলছেন, প্রচলিত রাজনীতির বাইরে দাঁড়িয়ে একজন আইনজীবী নেতা হিসেবে আল আমিনের প্রার্থিতা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নতুন আস্থা তৈরি করেছে।

সিলেট-৩ আসনে ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ

সিলেট-৩ আসনে এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ। এনসিপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুনেদও একবছরের বেশি সময় ধরে দেশে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। সিলেট-৩ আসনে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি জনসংযোগ চালিয়ে আসছেন।

তিনি জানান, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা সরকারের নিপীড়ন-হয়রানিমূলক মামলার পরে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। বর্তমানে তিনি দেশে আইন ব্যবসায় নিয়োজিত।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার জুনেদ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের শক্তি আমাকে প্রার্থী করেছে, সেটা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের। পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা এসেছি, ইনশা আল্লাহ পরিবর্তনই হবে।’

নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মো. ওমর ফারুক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ আসন নোয়াখালী-০১ চাটখিল সোনাইমুড়ি আসনটিতে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, ‘গণ-আন্দোলন করে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে সরাতে এনসিপির তরুণদের ভূমিকা ছিল। দেশের জন্য কিছু করলে এই তরুণরাই করবে। আপনাদের ভালোবাসা আর দোয়ায় দল আমাকে নোয়াখালী-১ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।

এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়—এটি আপনাদের আস্থা ও সমর্থনের ফসল। আমি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে, আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে চাই। এলাকার উন্নয়ন, অধিকার ও জনগণের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করাই হবে আমার একমাত্র লক্ষ্য।’

নোয়াখালী-৫ আসনে অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ (কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ ও সদর আংশিক) আসনে প্রয়াত বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের জায়গায় শাপলা কলি প্রতীকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে লড়বেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়রা নুর।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়রা নুর বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসা আর দোয়ায় দল আমাকে নোয়াখালী-৫ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়—এটি আপনাদের আস্থা ও সমর্থনের ফসল। আমি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে, আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে চাই। এলাকার উন্নয়ন, অধিকার ও জনগণের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করাই হবে আমার একমাত্র লক্ষ্য।’

হুমায়রা নূর আরো বলেন, পারিবারিকভাবে আমরা সচ্ছল ফ্যামিলি। আমার পরিবারের লোকজন সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমিও সৎ পথের উপার্জন দিয়ে নোয়াখালীবাসীর জন্য কিছু করতে চাই। নির্বাচনে আপনাদের সহযোগিতা চাই

খাগড়াছড়িতে অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা খাগড়াছড়িতে এনসিপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী।

জানা গেছে, অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা ঝুমা একজন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী, যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা সদরের মো. আব্দুল মতিনের পাঁচ কন্যার মধ্যে তৃতীয়। তিনি ২০০৮ সালে মাটিরাঙ্গা পাইলট হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ২০১০ সালে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ঢাকার স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০১৮ সালে তিনি ঢাকা জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং ২০২৩ সালে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা থেকে প্রথম নারী হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

তিনি জুলাই বিপ্লবে আহত এবং শহীদ ছাত্রদের পরিবারের জন্য আইনি সহযোগিতা দিয়েছেন। Know Your Rights – অধিকার জানো: ২০২০ সালে তিনি ফেসবুকভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্মটি প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ পান।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও শিক্ষাক্ষেত্রে ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন: শিক্ষাজীবনে তিনি এসব আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গে মনজিলা ঝুমা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় উপলব্ধি করেছি, আমরা আসলে একনায়কতন্ত্র এবং পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতির জালে জড়িয়ে আছি। আমাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে।

‘শিক্ষিত মানুষ রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ায় অযোগ্য ব্যক্তিরা এর দখল নিয়েছে। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এই অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।’

নতুন দলে যোগদানের কারণ সম্পর্কে এই আইনজীবী বলেন, ‘জুলাইয়ে গণহত্যার বিচারের দাবিতে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকেই আমি নতুন দলে যুক্ত হয়েছি। আমি এমন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে থাকতে চাই, যেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার রাজনীতি থাকবে। যেখানে থাকবে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের চর্চা।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘আমার লক্ষ্য এমন একটি রাজনৈতিক ধারা গড়ে তোলা, যেখানে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, গণতন্ত্রের প্রকৃত মূল্যায়ন হবে এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে।