যশোর-৪ সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কর্তৃক ঘোষিত প্রার্থী তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব ওরফে টি এস আইয়ুবের মনোনয়ন বাতিল ও পরিবর্তনের দাবিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ্ উদ্দিন রিগ্যানের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠান যশোর-৪ আসনের ভোটার ও বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রয়াত আব্দুল খালেক বিশ্বাসের পুত্র মোঃ ইকবাল কবির।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমকে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। অভিযোগ অনুযায়ী, এলসি জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ২১ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত। একই সঙ্গে তিনি চারটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেন এবং বর্তমানে ঋণখেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত প্রার্থী পতিত সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখরের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব অনিয়মে জড়িত ছিলেন বলে এলাকায় ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। ফলে যশোর-৪ আসনের সাধারণ ভোটার, স্থানীয় নেতাকর্মী ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ, অসন্তোষ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন : রুল খারিজ, জোট করলেও নির্বাচন করতে হবে নিজ নিজ প্রতীকে
আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো নোটিশে দাবি করা হয়, জুলাই সনদের ৭৫ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফার ১৩ নম্বর দফা অনুযায়ী দুর্নীতিবাজ, চার্জশিটভুক্ত আসামি ও ঋণখেলাপিদের দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার স্পষ্ট অঙ্গীকার রয়েছে। অথচ সেই নীতিমালা উপেক্ষা করেই যশোর-৪ আসনে বিতর্কিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা দলীয় নীতি ও জনগণের প্রত্যাশার পরিপন্থী।
নোটিশে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো ঋণখেলাপিকে বিএনপি মনোনয়ন দেবে না। কিন্তু সেই ঘোষণার পরও ৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে যশোর-৪ আসনে তালহা শাহরিয়ার আইয়ুবকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যা নোটিশ দাতার ভাষায় জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে এ বিষয়ে একটি লিখিত দরখাস্ত দলীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ার অভিযোগও নোটিশে তোলা হয়।
লিগ্যাল নোটিশে বিএনপি নেতৃত্বের কাছে তিন দিনের মধ্যে যশোর-৪ আসনের মনোনয়ন বাতিল করে একজন সৎ, যোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও জনআস্থাভাজন প্রার্থী মনোনয়নের দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে সতর্ক করা হয়েছে।

