সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএফএম মেজবাহ উদ্দিন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গতকাল রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বার।
তার মেয়ে অ্যাভোকেট সীমন্তী আহমেদ জানান, বনানী গোরস্থানে অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিনকে দাফন করা হবে।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএফএম মেজবাহ উদ্দিন ১৯৭৭ সালের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর তাকে আর স্থায়ী বিচারপতি করা হয়নি। এরপর তিনি আবার আইন পেশায় ফিরে আসেন। ২০০৯-২০১০ সেশনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন এ আইনজীবী।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার আন্দোলনে তিনি ছিলেন একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে গঠিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের তিনি ছিলেন সদস্য সচিব। ওই পরিষদের সভাপতি ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামসুল হক চৌধুরী।
এএফএম মেজবাহ উদ্দিন ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। পেশাগত জীবনে তিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিচারাঙ্গনে সততা, সাহস ও ন্যায়নিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।
তিনি সম্মিলিত পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরিপূর্ণভাবে একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি আজীবন বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন।
আইন পেশার বাইরে তিনি সামাজিক ও সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সজ্জন, মানবিক ও প্রজ্ঞাবান মানুষ। তার পুত্র-কন্যারা অত্যন্ত মেধাবী এবং তার জামাতা সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি। আত্মীয়-স্বজনের বাইরেও তিনি অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা সুরক্ষায় তার অবদান অনস্বীকার্য।

