সব আইনি ধাপ সম্পন্ন করে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলা এখন বিচারিক আদালতে পাঠানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার (আজ) মামলার নির্ধারিত তারিখে হাকিম আদালত থেকে এটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হবে। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালত অথবা আদালত নির্ধারিত অন্য কোনো আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি বলেন, অভিযোগপত্রভুক্ত ৩৯ জন আসামির মধ্যে এখনো ১৭ জন পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ, পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতিতেও বিচার পরিচালনার জন্য সব আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে মামলাটি এখন পুরোপুরি বিচার উপযোগী অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামের আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার পলাতক আসামি বান্দরবানে গ্রেপ্তার
গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ আইনজীবীরা মামলার পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
তবে মামলাটি বিচারিক আদালতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হলেও এখনো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের বিষয়ে কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আইনজীবীরা।
সহকারী পিপি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এতটা চাঞ্চল্যকর ও সংবেদনশীল একটি মামলার ক্ষেত্রে দ্রুত বিচার না হলে সাধারণ বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করতে পারে। তাই অবিলম্বে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে কার্যকর ট্রায়ালের মাধ্যমে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ওই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন গত বছরের ২৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় প্রথমে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫–১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে গত ১ জুলাই মোট ৩৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে ২৫ আগস্ট চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। বর্তমানে তাদের মধ্যে ১৭ জন পলাতক।

