ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির কর্মরত সহকারী শিক্ষকদেরকে কেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শূন্য পদে নিয়োগ দিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
বরগুনা জেলার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির ৭১২ জন সদস্যের দায়ের করা রিট আবেদনে এই রুল জারি করা হয়েছে। ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, সংস্থাপন সচিব, শিক্ষা সচিব, যুব ও ক্রীড়া সচিবসহ ৬ জনকে এই রুলের জবাব দিতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানী করেন সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী ব্যারিস্টার অরুণাভ দাশ শুভ্র।
জানা যায়, ২০১০ সালের ৬ মে দুপুরে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারজনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
বিগত ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি শিক্ষক পুল নীতিমালা ২০১৪” জারি করে। এতে বলা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলভুক্ত শিক্ষক ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন। ওই সময় তাদের সমপর্যায়ের স্বীকৃতি দেয়া হয়।
এর মধ্যে পুলভুক্ত শিক্ষকরা হইকোর্টে রিট দায়ের করলে তাদের শিক্ষক পদে নিয়োগের বিষয়টি সরকার বাস্তবায়ন করে। কিন্তু ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সদস্যসরা উপেক্ষিত রয়ে যান। তারা বিদ্যমান শূন্য পদে নিয়োগ না পাওয়ায় এই রীট দায়ের করেন।
রীট আবেদনকারীদের পক্ষে মাহমুদুল বারী রনি বলেন, আজ আমরা অনেক খুশি, আরও খুশি হবো যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যাশনাল সার্ভিসকে স্থায়ীকরণের মাধ্যমে ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার ওয়াদা পূরণ করেন। তিনি আমাদের মমতাময়ী মা, আমরা তার সন্তানের মতো। আমার বিশ্বাস তিনি আমাদের বিমুখ করবেন না।
রিট আবেদন কারীদের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার অরুণাভ দাশ শুভ্র বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় পুলভুক্ত শিক্ষকদের মতো ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সদস্যদের সমপর্যায়ের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হলেও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির চাকরীজীবীদের সহকারী শিক্ষক হিসাবে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এটা বৈষম্যমূলক, বে-আইনী এবং আবেদনকারীদের আইনগত প্রত্যাশার পরিপন্থি। তাই মহামান্য আদালত রিটের প্রাথমিক শুনানির পরিশেষে রুল জারি করেছেন।