আবদুল্লাহ আল হারুন রাসেল; অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; সদস্য সচিব, বঙ্গবন্ধু যুব আইনজীবী পরিষদ, সুপ্রিম কোর্ট শাখা।
তরুণ এই নেতৃত্বকে রাজনীতিতে তাঁর বিচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু শিক্ষাকালীন সময়ে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম বিশেষ করে স্কুলে পড়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের স্কুল শাখার সভাপতি ছিলাম। এরপর যখন কলেজে পড়ি তখনও আমি ছাত্রলীগের কলেজ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে যুগ্ম আহবায়ক ছিলাম আমার বিভাগে। এছাড়া ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেছি। ২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর সামনে ছাত্ররা যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিল। উত্তরাধিকার’৭১ নামের একটি সংগঠন থেকে আমরা সেখানে যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী বিচার হিসেবে ঘৃণা স্তম্ভ করি। আমি ঐ সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম।
তরুণ আইনজীবীদের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ কেমন?
আবদুল্লাহ আল হারুন রাসেল: সুপ্রিম কোর্টে যারা তরুণ আইনজীবী রয়েছে তাদের মধ্যে আমি রাজনীতির বিষয়ে প্রবল উৎসাহ ও আগ্রহ দেখতে পাই। তারা দেশের জন্য কিছুর করার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমাদের দেশে আইনজীবীদের যে নেতৃত্ব আগে ছিল এখন সেটা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পার্লামেন্টে যুক্তফ্রন্টের সাতাশি ভাগ সংসদ সদস্য আইনজীবী ছিলেন। কিন্তু সেই সংখ্যাটা উল্টে গিয়ে ২০০১ সালে সাতাশি ভাগ ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য হয়েছেন। এই বিষয়টি দেখতে হবে। তবে আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছে সেই ধারা ফিরিয়ে আনতে। এবার মন্ত্রীসভায় আইনজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নমিনেশনের ক্ষেত্রেও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তবু আমি আবার একই কথা বলতে চাই, ব্যবসায়ী বা যাদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই বা রাজনীতিতে কন্ট্রিবিউশন নেই তাদেরকে মনোনয়ন দিলে রাজনীতিতে প্রফেশনাল যারা তারা উৎসাহ হারাবে। তবে ২০০৮ সালে রাজনীতিতে প্রফেশনালদের কন্ট্রিবিউশন বেড়েছে। ফলে অনেকেই রাজনীতিতে উৎসাহ বোধ করছেন। আমি এখন যে সংগঠনে যুক্ত বঙ্গবন্ধু যুব আইনজীবী পরিষদ, সেটি বৃহৎ আকার ধারণ করেছে এবং দেশব্যাপী এই সংগঠন বিস্তৃতি লাভ করছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু যুব আইনজীবী পরিষদ সুপ্রিম কোর্ট শাখার প্রতিটি মিটিং এ যুব আইনজীবীদের আশানুরূপ এবং উৎসাহব্যঞ্জক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। আশা করি, এই তরুণ আইনজীবীরাই এক সময়ে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেবেন। আর সেটাকে অনুসরণ করে পরবর্তি প্রজন্ম রাজনীতিতে আরও বেশি সম্পৃক্ত হবেন। এভাবেই আমাদের রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে এবং আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।
আবদুল্লাহ আল হারুন রাসেল: প্রথম দিকে একজন নবীন আইনজীবীর প্রয়োজন একজন ভালো সিনিয়র এবং চেম্বার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সে ভালো সিনিয়র পায় না, এটা একটা সমস্যা। আর পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যা রয়েছে যেমন ভালো সিনিয়র পেলেও হয়ত দেখা গেল সে যে পরিমাণ টাকা-পয়সা পায় সেটা জীবনধারণের জন্য পর্যাপ্ত নয়। যদিও এই সমস্যা আগে বেশি ছিল তবে বর্তমানে তা অনেকাংশে দূর হয়েছে। এছাড়া কোর্টে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ল’ইয়ার থাকায় নতুন ল’ইয়ারদের বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: কাজি ফয়েজুর রহমান, নিউজ রুম এডিটর, ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কম।