‘যার নেই কোনো গতি, সে করে ওকালতি’ কিংবা ‘আপেল আর আইনজীবীর মধ্যে মিল কোথায়? দুটোকেই গাছে ঝুলতে দেখলে সুন্দর দেখায়’-এমন নানা ব্যঙ্গাত্মক কথা প্রচলিত আছে আইনজীবীদের নিয়ে।
সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, মানবসভ্যতায় অগ্রযাত্রায় আইনজীবী ধারণাটি আসার পর থেকেই এমন বিদ্রূপপূর্ণ কথা প্রচলিত রয়েছে সমাজে। আইনজীবীদের নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বাদী ও বিবাদীর দ্বন্দ্ব এবং বিবাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততাকে।
আবার এ কথাও সত্য যে, রাষ্ট্র, সমাজ কিংবা ব্যক্তি মানুষের অধিকার আদায়ে একজন আইনজীবী থাকেন মুখ্য ভূমিকায়। অনেক আইনজীবী আছেন যারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আইনপেশায় কর্মজীবন শুরু করেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক আইনজীবী তার পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করেন, নিশ্চিত করেন মানুষের অধিকার।
তাই নেতিবাচক ধারণা দূরে রেখে ভালোবাসুন আপনার আইনজীবীকে। নভেম্বরের প্রথম শুক্রবার উদযাপিত হয় ‘লাভ ইওর লইয়ার ডে’ বা ‘আইনজীবীকে ভালোবাসার দিন।’ সেই হিসেবে এবার ৫ নভেম্বর বিশ্বের অনেক দেশে পালিত হয়েছে দিনটি।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো দিনটি উদযাপন করা হয়। যার গোড়াপত্তন করেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী নাদের অ্যানিস। তিনি ছিলেন অ্যামেরিকান লইয়ার্স পাবলিক ইমেজ অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় পরিচালক। আইনজীবী ও আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করাই হলো দিনটির মূল উদ্দেশ্য।
মানবসভ্যতার শুরু থেকে বিভিন্ন রূপে আইন এবং আইনি কাঠামো সমাজে ছিল। যদিও এর অপব্যবহারের গল্পটাও নেহাত কম নয়। তারপরেও অন্যায় অত্যাচারের শিকার মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাতিঘর হয়ে আছে আইনি কাঠামো।
বিশ্বসভ্যতায় ইতিহাস যাদের প্রথম আইনজীবী হিসেবে চিহ্নিত করে, সম্ভবত তারা ছিলেন প্রাচীন এথেন্সের বক্তা। আর আইনি বিষয়ের প্রামাণিক দলিল রাখার কৃতিত্বটা দেয়া হয় মেসোপটেমীয় সভ্যতার ব্যাবিলনীয় রাজা হামুরাবিকে।
হামুরাবি কোডে ২৮২টি আইন পাওয়া যায়। যেখানে দৈনন্দিন পরিস্থিতি, অপরাধীদের শাস্তি থেকে শুরু করে একে অপরকে দেয়া সেবার জন্য মজুরির বিষয়টিও উল্লেখ ছিল।
ইতিহাস বলছে, শুরুতে আইনজীবীদের কোনো ফি নেয়ার অনুমতি ছিল না। ফলে এটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবিকা অর্জনকে কঠিন হয়ে পড়ে। রোমান সাম্রাজ্য অবশ্য আইনজীবীদের পাশে দাঁড়ায়। আইনি সেবার জন্য ফি নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। সূত্র- নিউজবাংলা