সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে দণ্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় চার বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ফেনীর একটি আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (৮ নভেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এই দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডিত ব্যক্তির নাম মো. আবুল কাশেম চিনা (৬০)। তিনি সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চর সাহাভিকারীর বাসিন্দা অজি উল্যাহর পুত্র।
আদালতে অভিযোগকারীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট এ.এস.এম শহিদ উল্যাহ ও আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট আহসান কবীর বেঙ্গল।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ জাকির হোসেন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, রায় ঘোষনাকালে আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে সাজা পরোয়ানা মূলে ফেনী জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাশেম চিনা নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জেঠাতো ভাই পরিচয় দিতেন।
একইসঙ্গে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের কাগজপত্র প্রতারণামূলক ব্যবহার করে একই এলাকার পরেশ চন্দ্র মজুমদার নামের এক ব্যক্তির ছেলে, মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনকে সোনাগাজী উপজেলাধীন বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী পদে চাকরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় প্রায় ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
এই ঘটনায় প্রতারিত হয়ে পরেশ চন্দ্র মজুমদার ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এই মামলা রুজু হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসাইনের নির্দেশে সোনাগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব সরেজমিনে বিস্তারিত তদন্ত করে একই বছরের ২৮ নভেম্বর ঘটনার সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরবর্তীতে বিচার চলাকালে বাদীপক্ষে ৭ জন ভুক্তভোগী সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়ে অভিযোগ প্রমাণ করেন। টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামীকে দণ্ডবিধির ৪০৬ ধারায় দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় আরও দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।
নথি পর্যালোচনায় আরো দেখা যায়, আসামী মো. আবুল কাশেম চিনা প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে সীল দিয়ে কতিপয় নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র বাদীপক্ষকে প্রদান করেন। আসামীর ধৃষ্ঠতা ও প্রতারণার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাকে সাজা প্রদান করেন।