দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা ৩ বিচারপতি
বিচারকাজ থেকে অব্যাহতি পাওয়া হাইকোর্টের তিন বিচারপতি

ঝুলে আছে আরও ৩ বিচারপতির বিচার

পেশাগত অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগে বিচারিক দায়িত্ব থেকে বিরত থাকা আরও ৩ বিচারপতির বিচার ঝুলে আছে। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ২৭ মাসেও শেষ হয়নি ওই তিন বিচারপতির অনিয়ম তদন্ত।

এ বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে তথ্য নেই খোদ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কাছে। এদিকে, বিচারকাজে অংশ নিতে না পারলেও বেতন-ভাতা, আবাসন, যানবাহনসহ আনুষঙ্গিক সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন তিন বিচারপতি।

দীর্ঘ ২৭ মাস ধরে বন্ধ হাইকোর্টের দুটি এজলাস। পেশাগত অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগে তিন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখায় পর থেকে বিচারপ্রার্থীদের জন্য খোলেনি দুই কোর্টের দরজা।

দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেও তা এখন ‘ফাইলবন্দি’। তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিচারবিভাগের মর্যাদার স্বার্থেই বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করা দরকার।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, উচ্চ আদালতের ৩ বিচারপতি বিচারকাজ পরিচালনা করছেন না, কেন করছেন না, কি কারণে করছেন না এটার ব্যাখ্যা রাষ্ট্রপতি ও সচিবালয় থেকে আসা উচিত বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, তারা রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন কিন্তু বিচারকাজ পরিচালনা করছেন না। এটি আদৌ কতখানি সঠিক।

বিচারপতি অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও এ বিভাগের মর্যাদা রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপের পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের।

সর্বোচ্চ আদালতের সাবেক এই বিচারপতি বলেন, আইনটি কি সুপ্রিম জুডিশিয়ালর কাউন্সিল হবে না সংসদীয় পদ্ধতিতে হবে, আমার মনে হয়ে এই বিষয়টি অমিমাংসিত রয়ে গেছে এত মাস ধরে। এটি কোনো অবস্থায় বাঞ্চনীয় নয়।

তিনি আরও বলেন, তিনজন বিচারপতিকে এভাবে বসিয়ে রেখে বেতন দেওয়া হচ্ছে এটির একটি সুরাহা হওয়া উচিত। যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে প্রমাণিত হয় তাহলে বিচার হোক।

উল্লেখ্য, হাইকোর্টের ওই তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক।

এর মধ্যে বিচারপতি সালমা মাসুদ ও বিচারপতি একেএম জহিরুর হকের বিরুদ্ধে বিধিবর্হিভূতভাবে অধস্তন আদালতের মামলায় হস্তক্ষেপ এবং বিচারপতি কাজী রেজাউল হকের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় অনিয়মের অভিযোগে ২০১৯ সালের আগস্টে বিচারকাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।