ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৮ বছর বয়েসের কন্যাসন্তানকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম ইমাম হোসেন মিসকিন (৪৫)। তিনি উপজেলার চর সাহাভিকারি গ্রামের মিসকিন বাড়ীর এনায়েত উল্যাহর ছেলে।
এসপি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রাজবাড়ী জেলা থেকে ইমাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ১৫ টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবাসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন ওই শিশুর মা। পরদিন ভুক্তভোগী শিশু নিজেই ফেনীর ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলামের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
মামলায় ইমাম ছাড়াও তার মামা চর দরবেশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালামকে আসামি করা হয়। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, ইমাম হোসেনের সঙ্গে ১৭ বছর আগে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে থাকেন। ২৭ জানুয়ারি রাতে তিনি রান্নাঘরে রুটি তৈরি করছিলেন। এ সময় তার আট বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ করে তার স্বামী। রান্নাঘর থেকে এসে বিছানার ওপর মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তড়িঘড়ি করে ইমাম হোসেন পালিয়ে যান।
ভিকটিমের মা জানান, ঘটনাটি ২৮ জানুয়ারি ইমামের মামা আবুল কালাম আজাদকে জানান। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়টি সমাধান না করে ৩০ জানুয়ারি আজাদের পরামর্শে দেনমোহরের ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তাকে তালাক দেন যুবদল নেতা ইমাম। তিনি আরও জানান, এর আগে আরও দুটি বিয়ে করেন ইমাম। ওই দুই সংসারে তিন ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে ইমাম হোসেন মিসকিন স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কথা পুলিশকে স্বীকার করেছেন। তবে নিজের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এদিকে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তালাকের বিষয়টি স্বীকার করলেও তাকে ধর্ষণের বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি তাকে জানানো হলে তিনি বাদীকে থানার আশ্রয় নিতে বলতেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন, সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল পলাশ উপস্থিত ছিলেন।