১৯ই ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বাংলাদেশ ক্রিমিনোলজি এসোসিয়েশনের উদ্যোগে সাইবার ক্রাইমের উপর একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম, পিপিএম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে র্যাবের মহাপরিচালক ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা,প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, অপরাধের ধরন দ্রুত পরিবর্তন সহ সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ গুলো তুলে ধরে সেই চ্যালেঞ্জ প্রতিরোধে র্যাবের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ এবং সাইবার ক্রাইম মোকাবেলায় র্যাবের স্যাফল্যের কথা বিষদভাবে তুলে ধরেন। তিনি সাইবার ক্রাইমকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই সমস্যা প্রতিরোধে এগিয়ে আশার আহ্বান জানান।
ওয়েবিনারে উদ্বোধনি বক্তব্য রাখেন চিটাগাং বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডঃ ইফতেখার চৌধুরি। উদ্বোধনি বক্তব্যে ডঃ ইফতেখার চৌধুরি বলেন সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে সম্ভব নয় বরং এর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
ওয়েবিনারে উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মিশুক চাকমা-বিপিএম (সেবা) Crime in Digital Platforms: Bangladesh Police Perspective শীর্ষক শিরোনামে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি তার প্রবন্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করত সাইবার ক্রাইম কি, সাইবার ক্রাইমের প্রকারভেদ, সাইবার ক্রাইম মোকাবেলায় করনীয় প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম সাইবার ক্রাইমের ধরন অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং অপরাধীদের সাজা সুনিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন । সাইবার ক্রাইমকে একত্রে না দেখে প্রতিটি সাইবার ক্রাইমকে আলাদা আলাদা করে দেখার পরামর্শ দেন ।
পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের এমডিএস (একাডেমিক এন্ড রিসার্চ) মোঃ গোলাম রসুল সাইবার ক্রাইমের উপর আরো একাডেমিক গবেষনা এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সাইবার সিকিউরিটি সাবজেক্ট চালু করার পরামর্শ দেন।তিনি সাইবার ক্রাইম মোকাবেলায় প্রশিক্ষিত জনবলের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ আজিজ রহমান সাইবার অপরাধের সংজ্ঞাকে আরো সুস্পষ্ট করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করে বলেন অন্যান্য প্রচলিত অপরাধের মতো এই অপরাধ সংঘটনের পেছনের কারন সমুহ গবেষণা করে খুজে বের করতে হবে এবং এই অপরাধ নির্মুলে পর্যাপ্ত প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের রিসার্চ সেলের আহবায়ক, মনিরা নাজমী জাহান সাইবার জগতে নারীর প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সার্বিক বিচার ব্যবস্থাকে কিভাবে আর বেশী নারীবান্ধব করা যায় সেই বিষয়ে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ডঃ মোহাম্মদ বিন কাশেমের বলেন যেহেতু পুলিস সামাজিক একজন এজেন্ট তাই তার একার পক্ষে সাইবার অপরাধ দমন করা কষ্টসাধ্য। এই অপরাধ দমনে অন্যান্য সামাজিক এজেন্টদের ও গুরুত্ব পুর্ন ভুমিকা রাখতে হবে ।