নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও মারধর করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাঁর বাবা গোলাম মুর্তজাসহ ৯০ জনের নামে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে।
নড়াইল সদর থানায় গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি করেন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মুজাহিদুর রহমান।
আজ বুধবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে মামলাটি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মামলার ১ নম্বর আসামি মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজাকে। ৩ ও ৪ নম্বর আসামি হিসেবে রয়েছেন যথাক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খান।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আঞ্জুমান আরা, সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল কুন্ডু ও সরদার আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মলয় কুন্ডু, জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি মাসুম, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী জহিরুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার, আইনজীবী মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে প্লটের বরাদ্দ বাতিলে রিট
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সদর উপজেলার নাকশি বাজার থেকে মালিবাগ হয়ে মিছিল সহকারে শহরের দিকে আসছিলেন। মিছিলটি শহরের শেখ রাসেল সেতুর পূর্ব পাশে পৌঁছালে ১ থেকে ৪ নম্বর আসামির হুকুমে অন্য আসামি মাহমুদুল হাসান শটগান দিয়ে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
তখন সাবেক পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেনের হুকুমে আসামি হাফিজ খান মিলন ও নাঈম ভূইয়া পিস্তল দিয়ে মিছিলে গুলি করে। এতে মিছিলে থাকা শফিকুল ইসলাম ও সোহান বিশ্বাস নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন।
আসামিদের মধ্যে কয়েকজন বোমাবর্ষণ করেন, কয়েকজন ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ করেন। অন্য আসামিরা লোহার রড, চায়নিজ কুড়াল ও বাঁশের লাঠি নিয়ে নিরীহ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করেন। এতে অনেকেই আহত হন।
বাদী উল্লেখ করেছেন, আসামিদের ভয়ে সেসময় আহত অনেকেই সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে পারেননি। সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও ক্লিনিকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং অনেকেই গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার সময় অনুকূল পরিবেশ না থাকায় মামলা করতে পারেননি।