অধস্তন আদালতের ১৫ বিচারকের সম্পদের বিবরণ চেয়ে দুদকের চিঠি

দুর্নীতি সমগ্র সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে: রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার প্লট বরাদ্দ বাতিল করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম ওই প্লট দুর্নীতির মামলার রায়ে এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন দুদকের কৌঁসুলি তরিকুল ইসলাম।

২০২২ সালের শেষে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১৩ নম্বর প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় শেখ রেহানাকে। ২০৩ নম্বর সড়কের ওই প্লটটির আয়তন ১০ কাঠা।

এ বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় অনিয়মের দায়ে এদিন শেখ রেহানাকে ৭ বছর, শেখ হাসিনাকে ৫ বছর ও রেহানাকন্যা টিউলিপ সিদ্দিককে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া রাজউকের কর্মকর্তাসহ ১৪ আসামিকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছর করে কারাদণ্ড।

রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০টা ৫৯ মিনিটে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

আরও পড়ুনবাংলাদেশের আদালতে প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ এমপি দণ্ডিত

রায় পড়তে বিচারক রবিউল আলম এজলাসে ওঠেন ১১টা ২৯ মিনিটে। উঠেই এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন। তিনি বলেন, “রায় আমি বাংলায় দেব—যেহেতু আমি বাঙালি।”

রায়ের পর্যবেক্ষণ দেওয়ার আগে কোরআনের একটি আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, “মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন, পাপ ও জুলুমের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহায়তা করো না। দুর্নীতি বর্তমানে রোগে পরিণত হয়েছে।

“দুর্নীতি সমগ্র সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আমাদের—সমাজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে।”

এরপর আদালত সাজার রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত অন্য ১৪ জন হলেন—সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) (এনডিসি) মো. অলিউল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন) অবসরপ্রাপ্ত মেজর প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলাম, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম ও সাবেক উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ।

দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।