প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের সমন্বয়ের চেষ্টা করব: প্রধান বিচারপতি

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল একটি দেশের উন্নয়ন হতে পারে বলে মন্তব্য করে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগ—রাষ্ট্রের এ তিন অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কেবল একটি দেশ উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে পারে। যেখানে তিন অঙ্গের মধ্য কাজের সমন্বয়ের অভাব থাকে, সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তিন অঙ্গের কাজের মধ্য যেন সমন্বয় রক্ষা করা যায়, সে জন্য আমি সব সময় চেষ্টা করব।’

আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রথা অনুসারে তাঁকে অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয়। আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি তার বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বক্তব্যের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের ফসল আজকের বাংলাদেশ।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যেন সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে সংবিধান অনুযায়ী তাঁর নিজ দায়িত্ব পালন করেন, সেটিও আমি নিশ্চিত করতে চেষ্টা করব। আমাদের এমনভাবে আদালতের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে হবে যেন আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শক্তিমান-দুর্বল, ধনী-গরিব, সকলের মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মে যে তাঁরা সকলেই সমান। এবং আদালতের কাছ থেকে শুধু আইন অনুযায়ী তাঁরা ন্যায়বিচার পাবেন। এতে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস দৃঢ় হবে।

ভাষাশহীদদের স্মরণে নিজের বক্তব্য বাংলায় প্রদান করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মামলার জট আজ আমাদের বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের সবচেয়ে বড় শক্তি সততা। তাঁর জবাবদিহির জায়গা হচ্ছে নিজের বিবেক। সংবিধান ও দেশের আইন তাঁর একমাত্র অনুসরণীয়। শপথকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে কারও প্রতি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে বিচারকাজ পরিচালনা করা হবে তাঁর দায়িত্ব। বিচারক যদি শুধু তাঁর শপথ অনুযায়ী বিচারকাজ পরিচালনা করেন, তাহলে তাঁর জন্য আলাদা অনুসরণীয় আচরণবিধির প্রয়োজন হয় না।

এ সময় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম