পুলিশের সাবেক উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান
পুলিশের সাবেক উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান

ডিআইজি মিজানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান ও তার পরিবারের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশনেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার (২৪ জুন) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা হয়। দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদক দফতরে করা এটি প্রথম মামলা।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাকি তিন আসামি হলেন- স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপন ও ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসান।

এর আগে, রোববার (২৩ জুন) দুদক মামলার অনুমোদন দেয়।

প্রসঙ্গত, এক নারীকে জোর করে বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে মিজানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগে একই বছরের ৩ মে মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বেশ কিছু অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করছিলেন খন্দকার এনামুল বাছির। সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এ বিষয়ে ডিআইজি মিজান দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের সঙ্গে ঘুষ সংক্রান্ত অডিও ফাঁস করেন।

এছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আছে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে প্রভাব খাটিয়ে গ্রেফতার এবং এক সংবাদ পাঠিকা ও এক নারী রিপোর্টারকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। পুলিশের নিয়োগ, বদলিতেও একসময় ভূমিকা রাখতেন তিনি। গ্রেফতার ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে টাকা আদায়ের অভিযোগও আছে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, রোববার (২৩ জুন) দুদক আইনের সংশোধিত বিধিমালা প্রকাশ হয়। এ অনুযায়ী এখন থেকে দুর্নীতির তফসিলভুক্ত অপরাধের মামলা করতে আর থানায় যেতে হবে না। নিজ দফতরেই মামলা করতে পারবে দুদক। সংশোধিত সেই বিধিমালা অনুযায়ী ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করলো সংস্থাটি।

সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী, কেউ যদি থানায় দুর্নীতির অভিযোগ করেন, সেক্ষেত্রে পুলিশ সেটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে রেকর্ড করবে। পরবর্তী সময়ে তা অনুসন্ধানের জন্য দুদকে পাঠাবে। শুধু তাই নয়, দুদক চাইলে গুরুত্ব বিবেচনায় যেকোনও অভিযোগ দীর্ঘ সময় ধরে অনুসন্ধান না করে সরাসরি মামলা করতে পারবে।