স্ত্রীর তালাকের নোটিশ পেয়ে খুশিতে স্বামীর দুগ্ধস্নান

বিবাহ বিচ্ছেদ সব সময় বিষাদের। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে কেউ খুশি হয় এমন ঘটনা কমই শোনা যায়। ঠিক এমনটাই ঘটেছে  টাঙ্গাইলের জাঙ্গালিয়া গবাদলা গ্রামের আলমের ক্ষেত্রে। স্ত্রীর তালাকের নোটিশ পেয়ে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পরেছেন। তালাকের নোটিশ পেয়ে খুশিতে দুধ দিয়ে গোসল করেন তিনি। আনন্দে দুই শতাধিক লোককে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে ভূরিভোজও করিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের মৃত নয়ন আলীর ছেলে আলমকে (১৮) একই গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রিনা আক্তার (১৬) তালাকের নোটিশ পাঠালে তিনি এ কাণ্ড করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুধ দিয়ে গোসল করার ছবিটি ভাইরাল হলে পুরো উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়।

ছেলের দুধ দিয়ে গোসল করার খবর শুনে মেয়ের বাবা আনোয়ার ড্রাইভার আদালতে মানহানি মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে পরিষদের গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনমাস আগে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের মৃত নয়ন আলীর ছেলে আলম (১৮) একই গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রিনা আক্তারকে (১৬) ভালোবেসে বিয়ে করেন। ছেলে-মেয়ের চাপেই বাবা-মা এ বাল্যবিয়েটি দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিয়ের একমাস পার হতে না হতেই নেশা করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। এ মনোমালিন্যের একপর্যায়ে স্বামী আলমকে তালাক দেন স্ত্রী রিনা।

মেয়ের বাবা আনোয়ার ড্রাইভার জানান, ‘ছেলে কামাই রোজগার তো করেই না, উল্টো নেশা করে মাতলামি করে। মেয়ে তার নেশাখোর স্বামীর সংসার করবে না বলে তালাক দিয়েছে।’

স্থানীয়রা জানান, এক সময় কোনো শুভ খবরে দুধ ঢেলে, আপনজনকে আশীর্বাদ করা ছিল পাহাড়ি গারো সমাজের প্রচলিত নিয়ম। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোচরা নতুন বধূকে বরণে দুধে স্নান করাতেন। বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পুনঃএকত্রীকরণ হলে দুধ ঢেলে আশীর্বাদের রেওয়াজ এখনো রয়েছে। যাতে সারাজীবন টিকে থাকে সেই সম্পর্ক। কিন্তু তালাকের নোটিশ পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্বামী খুশিতে দুধে গোসল করেন- এমন ঘটনা সত্যিই বিরল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

বেরিবাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুলহাস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার জানান, বিয়েটি ছিল প্রেমঘটিত বাল্যবিয়ে। তালাক দেয়া স্ত্রীর অধিকার, তাই বলে দুধ দিয়ে গোসল করে আনন্দ প্রকাশ করা ঠিক নয়।