পুরুষকে ঘরজামাই হতে চাপ দেওয়া নিষ্ঠুরতা: দিল্লি হাইকোর্ট
দিল্লি হাইকোর্ট

বাটার চিকেন ও ডাল মাখানি কার, দিল্লি হাইকোর্টে দুই রেস্তোরাঁর লড়াই

বাটার চিকেন। নাম শুনলেই জিভে জল আসে। ভারতীয় খাবার হিসেবে বিদেশিদের কাছেও আছে এর কদর। তবে সুস্বাদু এই পদটি প্রথম কে রেঁধেছিলেন, তা কখনো ভেবে দেখেছেন? দিল্লির দুইটি রেস্তোরাঁ এবার এই নিয়েই মামলা লড়ছে আদালতে। এক পক্ষে মোতিমহল, অন্য পক্ষে আছে দায়রাগঞ্জ।

দিল্লির বিখ্যাত রেস্তোরাঁ মোতিমহলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁর দাবি, মোতিমহলের প্রতিষ্ঠাতা, কুন্দনলাল গুজরাল ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেন। দিল্লির আগে পেশোয়ারে প্রথম এই রেস্তোরাঁ খোলা হয়েছিল। সেইসময় এই পদের আবিষ্কার করেন তিনি। তখন ভারত অবিভক্ত ছিল। দেশভাগের পর দিল্লিতে চলে আসে গুজরাল পরিবার।

তাদের আইনজীবী, দরিয়াগঞ্জ রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে দুই হাজার ৭৫২ পাতার একটি মামলা দাখিল করেছেন দিল্লি হাইকোর্টে। মোতিমহলের দাবি, ডাল মাখানির আবিষ্কারকও তাদেরই পূর্বপুরুষ। দরিয়াগঞ্জ তাদের এই পদটির সুখ্যাতিরও ভাগীদার হতে চাইছে।

গুজরাল পরিবার এই কারণে দুই লাখ ৪০ হাজার ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। দরিয়াগঞ্জ মোতি মহলের ওয়েবসাইটের লে-আউট পর্যন্ত চুরি করেছে বলেও তাদের অভিযোগ।

মোতিমহলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মণীশ গুজরাল বলেন, ‘কেউ কারো উত্তরাধিকার কেড়ে নিতে পারে না। আমাদের ঠাকুরদা যখন পাকিস্তানে ছিলেন, তখন তিনি এই রান্না আবিষ্কার করেন।’

দিল্লিতে দরিয়াগঞ্জ নামের রেস্তোরাঁটি চালু হয়েছে ২০১৯ সালে। তাদের পাল্টা দাবি, পরিবারের প্রয়াত সদস্য কুন্দনলাল জাগ্গি ১৯৪৭ সালে দিল্লিতে মোতিমহল রেস্তোরাঁ খোলার সময় গুজরালের অংশীদার ছিলেন। সেখানে তিনিই খাবারটি আবিষ্কার করেন। তাই এই পদে তাদের অধিকার রয়েছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে ১৯৪৯ সালের নিবন্ধিত একটি বিবর্ণ, হাতে লেখা অংশীদারত্বের নথিও দেখিয়েছে দরিয়াগঞ্জ।

এই মামলার খবর সামাজিক মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। ভারতের সাইকৃষ্ণা অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আইনজীবী (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি সংক্রান্ত) অমিত দত্তের কথায়, ‘এটা অভিনব মামলা। সত্যিই জানি না, কে বাটার চিকেন প্রথম তৈরি করেন। আদালতের ওপর প্রচুর চাপ পড়বে।’

গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্টে এই মামলার প্রথম শুনানি হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি মে মাসে। তবে বাটার চিকেন আর ডাল মাখানি নিয়ে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কে জিতবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত।