বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

জিবিএক্স লজিস্টিক লিমিটেডের আয়কর নথি তলব

বাংলাদেশি ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং কোম্পানি জিবিএক্স লজিস্টিক লিমিটেডের অর্থের আয়কর সংক্রান্ত নথিপত্র হাইকোর্ট তলব করেছেন। আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে এ সংক্রান্ত নথি আদালতে দাখিল করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বলা হয়েছে।

এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

গত ৫ আগস্ট ‘৫৬ কোটি টাকার আয়কর দাবি পড়ে আছে এনবিআরে’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিজেদের মতো করে আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছিল একটি কোম্পানি। তাতে কোম্পানিটি আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা। ৬১ লাখ টাকার বেশি করও জমা দিয়েছিল তারা। কিন্তু এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সন্দেহ হলে তারা তদন্তে নামে। তাতেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। দেখা যায়, আলোচ্য কর বছরে কোম্পানিটি আয় করেছে ৩৬৬ কোটি ৬ লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে কোম্পানিটির মোট আয়করের পরিমাণ ৫৬ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এনবিআর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, জিবিএক্স লজিস্টিক আমদানি ও রফতানিকারকদের নানা সেবা দিয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন আমদানি ও রফতানিকারকদের মালামাল বিদেশে পাঠানোর জন্য জাহাজ এবং এয়ারলাইন্সের কার্গো স্পেস বুকিং করে থাকে। এ বিপরীতে সংশ্লিষ্ট আমদানি ও রফতানিকারকের কাছ থেকে কমিশন পেয়ে থাকে তারা।

কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কোম্পানিটি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস লাইন এবং অপর বিদেশি কোম্পানি হ্যাপাগ লইয়েড থেকে যে কমিশন পেয়েছে, তার বিপরীতে উৎস কর বাবদ ৬১ লাখের একটু বেশি পরিমাণ টাকা জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে এনবিআরের সন্দেহ হলে তারা তদন্তে নামে।

এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল বিস্তারিত তদন্ত করে বিভিন্ন ব্যাংকে কোম্পানিটির মোট ছয়টি একাউন্টের সন্ধান পায়। এসব একাউন্টের লেনদেনও ওই সেলের নজরে আসে। তাতে দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির একাউন্টগুলোতে কমিশন বাবদ মোট জমা হয়েছে ১৬১ কোটি ২৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৬৯ টাকা। টাকাগুলো ব্যাংক এশিয়ার গুলশান শাখা, ওয়ান ব্যাংকের চট্রগ্রাম আগ্রাবাদ শাখা, জনতা ব্যাংকের চট্রগাম পোর্ট কর্পোরেট শাখা, সোনালী ব্যাংকের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের গুলশান শাখা এবং এইচএসবিসি ব্যাংকে জমা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে আইনজীবী মনজুর নাহিদ রিট আবেদনটি করেন। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।