হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

সংবাদপত্র হচ্ছে সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ: হাইকোর্ট

সংবাদপত্র হচ্ছে সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। এই চতুর্থ স্তম্ভ (সাংবাদিকরা) যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে রাষ্ট্রের বাকি তিন স্তম্ভ (আইন সভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ) সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়া সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানিকালে আজ সোমবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য।

শুনানিকালে আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। তারাই সমাজের নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা জেগে থাকলে সমাজে অন্যায় কম হয়। কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাসার দরজা ভেঙে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে একজন সাংবাদিককে যেভাবে দণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা ক্ষমতার অপব্যাবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, সংবাদপত্র হচ্ছে সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। এই চতুর্থ স্তম্ভ (সাংবাদিকরা) যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে রাষ্ট্রের বাকি তিন স্তম্ভ (আইন সভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ) সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে।

শুনানিতে হাইকোর্ট আরও বলেন, একজন ব্যক্তি বা একজন পদধারী রাষ্ট্র বা সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করে না। ওই ব্যক্তি বা পদধারী যদি কোনো অন্যায় করে থাকে, সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র বা সরকার যদি তাকে সমর্থন না দেয় সেটাই হবে আইনের শাসন। আর সরকার বা রাষ্ট্র যদি ব্যক্তির অন্যায় কাজে সমর্থন দেয় সেটা হবে আইনের লঙ্ঘন।

আদালত বলেন, ‘কুড়িগ্রামের ওই ঘটনার পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। উনি বলেছেন, ডিসি যদি অপরাধ করে তাহলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আমরা উনার বক্তব্যর প্রশংসা করছি। আমরা মনে করি, আমরা একজন ভালো মন্ত্রী পেতে যাচ্ছি।’

এরপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মধ্যরাতে বাসার দরজা ভেঙে সাংবাদিক আরিফুলকে সাজার মামলার নথি তলব করেন। পাশাপাশি পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেন।

এর আগে, গত ১৫ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থী হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়।

এছাড়াও রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়।