ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ

ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও প্রথিতযশা আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৩ সালের (১২ জুলাই) আজকের দিনে ‘জাতির অভিভাবক’ খ্যাত এই আইনজীবী মৃত্যুবরণ করেন।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ দেশের আইন জগতে অসামান্য অবদান রাখা ছাড়াও অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ‘জাতির অভিভাবক’ নামে পরিচিত ছিলেন এবং সব সময় রাজনৈতিক পরিচিতি এবং সম্পৃক্ততা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি
সৈয়দ ইশতিয়াক ১৯৩২ সালের ১৮ জানুয়ারি অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ জাফর আহমেদ দিনাজপুরের (পশ্চিমবঙ্গ) হিলির জমিদার ও ব্যবসায়ী ছিলেন।

শিক্ষাজীবন
ইশতিয়াক হিলির রামনাথ ইংরেজি হাইস্কুলে ও পরে কলকাতা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর পরিবারের সাথে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন ও ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ., ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৪ সালে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে বৃটেন যান এবং ১৯৫৮ সালে সেখানকার লিংকনস ইন থেকে বার-এট-ল এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস্ থেকে অর্থনীতিতে এম.এসসি. ডিগ্রী লাভ করেন।

কর্মজীবন
১৯৬০ সাল থেকে আমৃত্যু আইন পেশায় নিয়োজিত থাকা ব্যারিস্টার ইশতিয়াক ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রের খন্ডকালীন অধ্যাপক, ১৯৭২ সালে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এবং ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তৃতীয় এটর্নি জেনারেল ছিলেন।

তিনি বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ৩০ মার্চ হতে ২৩ জুন পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এবং বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ১৬ জুলাই হতে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।

সম্মাননা
তার নামে আইন সাংবাদিকতায় পদক চালু করা হয়েছে, যাতে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দু’টি করে মোট চারটি পদক দেয়া হয়।

ব্যক্তিগত জীবন
সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ১৯৫৫ সালের জুনে সুফিয়া আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুফিয়া আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক। আহমেদ দম্পতির দুই সন্তান; পুত্র সৈয়দ রিফাত আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক এবং কন্যা রাইনা আহমেদ একজন চিকিৎসক।